আপনাদেরকে একটা হিকমত শিখাবো আজকে।
এটাই শেষভাবে জানানো সতর্কবার্তা হবে। আপনারা এটা তো দেখেছেনই যে আমরা অনলাইনে এখন প্রচার কমিয়ে দিয়েছি। সত্য কথা বলা কমিয়ে দিয়েছি। পোস্ট বাদ দেই, আর কিছুদিন পর হয়তো আমাদেরও নাও পেতে পারেন।
এতে কার ক্ষতি হবে?
বর্তমান পরিস্থিতি তো দেখতেছেনই সবাই। ইয়েমেন, ইরাক, ইরান, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, মিয়ানমার, কাশ্মীর হয়ে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা পর্যন্ত চলে এসেছে।
ভারতে মুসলিমদের সাথে কি হচ্ছে তা নতুন করে বলার কিছুই নেই। আপনি যদি না জানেন এসব তাহলে বুঝবো এগুলো আপনার ইচ্ছাই যে এগুলো এড়িয়ে চলেছেন। এগুলো সব বাসি জিনিস। নতুন কিছু নেই যে আপনি জানতে পারেন নি।
দারুল উলুম দেওবন্দ ও কিছুদিন পর অচল হবে। আর এর পরই আস্তে আস্তে সবই আপনারা দেখতে পাবেন। যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে। আর শুরু হবে সেই হাদিসের বাণীর কথা। যেগুলোকে মানুষ জাল আর জঈফ বলে তাহকিক করে বেড়াচ্ছে।
এটা আপনার জানা উচিত যে, পৃথিবীতে যা হচ্ছে, আগে যা হয়েছে, আর পরে যা হবে সবই ধর্মকে কেন্দ্র করেই।
আর এর পরেই সোজা আপনার বাসায় আপনি এই অবস্থা দেখতে পাবেন।
কিছুই করার থাকবে না। আপনার স্ত্রী? সন্তান? বাবা মা? আর কেউ আছে পছন্দের?
পরকালের আজাব বিশ্বাস করা লাগবে না, ইহকালেই আজাব দেখার জন্য সবাইকে স্বাগতম।
এক ভাইয়ের কথা আমার খুব ভাল লেগেছে-
"উঠিতেছে ঝড়, আসিতেছে তুফান, বাজিতেছে গগন, ভাসিতেছে লাশ।
এ ঝড় প্রতি ক্ষণে জানাচ্ছে সত্যের প্রতি আহ্বান,
এই ঝড়েই মরবে শুকর, বাচবে সত্যের প্রাণ।"
জী সত্যের প্রাণগুলো বেচে যাবে!
তো হিকমত টা কি? এই হিকমত আমার মত গুনাহগারদের মাথা থেকে বের হয়নি। তাহলে আমার পিছনে কে আছে বা কার কথা আমি আপনাদের জানাচ্ছি সেটা নিয়েও একটু চিন্তা-ফিকির আপনাদের করা উচিত।
মূল কথাঃ
আজকের হিকমতপূর্ণ সতর্কবার্তাটি হাদিস দিয়ে নয়, বরং কুরআন থেকে সরাসরি। তারপরও কেউ যদি আবার বলে যে আয়াত নিয়ে সমস্যা বা (নাউজুবিল্লাহ) কিছু, তাদের সাথেও আমাদের আর কোন তর্ক নেই। তারা তাদের মত স্বাধীন ইহকালে।
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (ছল্লাল্লহু য়ালাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রায়ই হাদিস বা কোন কথা বলে কুরআনের আয়াত বলেছেন। এই কুরআন এর মোজেজা আজ বিজ্ঞান দেখতে পাচ্ছে।
অনেক আয়াত দিয়ে এও বুঝায় যে গানিতিকভাবে কিভাবে অনেক কিছু সমাধান করা যায়।
আজ সেটি আপনাদের দেখাবো। এর হিকমত দেখতে হলে আপনি শুধু কুরআনের আয়াত পড়ে বুঝবেন না, তাফসির ও দেখতে হবে যে তাতে কি বলা আছে। আর এই হিকমত আর গুলোর সাথে এভাবে মিলবে না।
সূরা ইব্রাহীম (Sura Ibrahim)
আয়াত ৪১-৫২ (শেষ পর্যন্ত)
আয়াতগুলিঃ (অনুবাদঃ ইবনে কাসির দিয়ে)
_________________________________
14:41
رَبَّنَا اغْفِرْ لِى وَلِوٰلِدَىَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ
হে আমাদের প্রতিপালক! হিসাব গ্রহণের দিন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে আর মু’মিনদেরকে ক্ষমা করে দিও,
_________________________________
14:42
وَلَا تَحْسَبَنَّ اللَّهَ غٰفِلًا عَمَّا يَعْمَلُ الظّٰلِمُونَ ۚ إِنَّمَا يُؤَخِّرُهُمْ لِيَوْمٍ تَشْخَصُ فِيهِ الْأَبْصٰرُ
যালিমরা যা করছে সে ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে কক্ষনো উদাসীন মনে কর না। তিনি তাদেরকে সেদিন পর্যন্ত ঢিল দিচ্ছেন যেদিন ভয়ে আতঙ্কে চক্ষু স্থির হয়ে যাবে।
_________________________________
14:43
مُهْطِعِينَ مُقْنِعِى رُءُوسِهِمْ لَا يَرْتَدُّ إِلَيْهِمْ طَرْفُهُمْ ۖ وَأَفْـِٔدَتُهُمْ هَوَآءٌ
আতঙ্কিত হয়ে মাথা তুলে পালাতে থাকবে, দৃষ্টি তাদের নিজেদের পানে ফিরে আসবে না, আর তাদের দিল উড়ে যাবে।
_________________________________
14:44
وَأَنذِرِ النَّاسَ يَوْمَ يَأْتِيهِمُ الْعَذَابُ فَيَقُولُ الَّذِينَ ظَلَمُوا رَبَّنَآ أَخِّرْنَآ إِلٰىٓ أَجَلٍ قَرِيبٍ نُّجِبْ دَعْوَتَكَ وَنَتَّبِعِ الرُّسُلَ ۗ أَوَلَمْ تَكُونُوٓا أَقْسَمْتُم مِّن قَبْلُ مَا لَكُم مِّن زَوَالٍ
কাজেই মানুষকে সতর্ক কর সেদিনের ব্যাপারে যেদিন তাদের উপর ‘আযাব আসবে। যারা যুলম করেছিল তারা তখন বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে অল্পদিনের জন্য সময় দাও, আমরা তোমার আহবানে সাড়া দিব আর রসূলদের কথা মেনে চলব।’ (তখন তাদেরকে বলা হবে) তোমরা কি পূর্বে শপথ করে বলনি যে, তোমাদের কক্ষনো পতন ঘটবে না?
_________________________________
14:45
وَسَكَنتُمْ فِى مَسٰكِنِ الَّذِينَ ظَلَمُوٓا أَنفُسَهُمْ وَتَبَيَّنَ لَكُمْ كَيْفَ فَعَلْنَا بِهِمْ وَضَرَبْنَا لَكُمُ الْأَمْثَالَ
অথচ তোমরা সেই লোকগুলোর বাসভূমিতে বসবাস করছিলে যারা নিজেদের প্রতি যুলম করেছিল আর তোমাদেরকে স্পষ্ট করে দেখিয়ে দেয়া হয়েছিল আমি তাদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেছিলাম। আর আমি বহু উদাহরণ টেনে তোমাদেরকে বুঝিয়েও দিয়েছিলাম।
_________________________________
14:46
وَقَدْ مَكَرُوا مَكْرَهُمْ وَعِندَ اللَّهِ مَكْرُهُمْ وَإِن كَانَ مَكْرُهُمْ لِتَزُولَ مِنْهُ الْجِبَالُ
তারা যে চক্রান্ত করেছিল তা ছিল সত্যিই ভয়ানক, কিন্তু তাদের চক্রান্ত আল্লাহর দৃষ্টির ভিতরেই ছিল, যদিও তাদের চক্রান্তগুলো এমন ছিল না যে, তাতে পর্বতও টলে যেত।
_________________________________
14:47
فَلَا تَحْسَبَنَّ اللَّهَ مُخْلِفَ وَعْدِهِۦ رُسُلَهُۥٓ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ ذُو انتِقَامٍ
(অবস্থা যতই প্রতিকূল হোক না কেন) তুমি কক্ষনো মনে কর না যে, আল্লাহ তাঁর রসূলগণকে দেয়া ওয়া‘দা খেলাপ করবেন, আল্লাহ মহা প্রতাপশালী, প্রবল প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
_________________________________
14:48
يَوْمَ تُبَدَّلُ الْأَرْضُ غَيْرَ الْأَرْضِ وَالسَّمٰوٰتُ ۖ وَبَرَزُوا لِلَّهِ الْوٰحِدِ الْقَهَّارِ
যেদিন এ পৃথিবী বদলে গিয়ে অন্য এক পৃথিবীতে রূপান্তরিত হবে আর আসমানসমূহও (বদলে যাবে), আর মানুষ সমুস্থাপিত হবে এক ও অপ্রতিরোধ্য আল্লাহর সম্মুখে।
_________________________________
14:49
وَتَرَى الْمُجْرِمِينَ يَوْمَئِذٍ مُّقَرَّنِينَ فِى الْأَصْفَادِ
সেদিন তুমি অপরাধীদেরকে দেখবে শৃঙ্খলে তাদের হাত পা শক্ত করে বাঁধা।
_________________________________
14:50
سَرَابِيلُهُم مِّن قَطِرَانٍ وَتَغْشٰى وُجُوهَهُمُ النَّارُ
তাদের পোশাক হবে আলকাতরার আর আগুন তাদের মুখমন্ডল আচ্ছন্ন করবে।
_________________________________
14:51
لِيَجْزِىَ اللَّهُ كُلَّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ
(এটা করা হবে এজন্য) যাতে আল্লাহ প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কৃতকর্মের প্রতিফল দিতে পারেন। আল্লাহ তো হিসাব গ্রহণে খুবই দ্রুতগতি।
_________________________________
14:52
هٰذَا بَلٰغٌ لِّلنَّاسِ وَلِيُنذَرُوا بِهِۦ وَلِيَعْلَمُوٓا أَنَّمَا هُوَ إِلٰهٌ وٰحِدٌ وَلِيَذَّكَّرَ أُولُوا الْأَلْبٰبِ
এটা মানুষদের জন্য একটা বার্তা যার দ্বারা তাদেরকে সতর্ক করা হচ্ছে আর যাতে তারা জানতে পারে যে, তিনি এক ইলাহ আর যাতে বুদ্ধিমান মানুষেরা উপদেশ লাভ করে।
_________________________________
তো এই আয়াত দ্বারা কি কোন ইঙ্গিত পেলেন? আমিও পাইনি আপনাদের মত। হয়তো এর তাফসীর পড়েও নাও বুঝতে পারি। তবে মূল কথা সংক্ষেপে বলি।
এটি ১৪৪১ হিজরি চলতেছে। ২,৩ মাসের মত হয়েছে মাত্র।
আমি এখানে যা করেছি তা হলো-
সূরা ইব্রাহীম যেটি ১৪ নং সূরা কুরআনের।
আর ৪১ আয়াত থেকে এনেছি পরের সব আয়াতগুলো।
মানে ১৪৪১(২০১৯-২০২০ মাঝামাঝি পরে তবে সাল আমরা ২০১৯ই ধরলাম। কারণ এটি মাঝামাঝি পরে ঈসায়ী সালের হিসাব) হিজরি যেটি চলতেছে তার-
সূরা ইব্রাহীম ১৪+৪১ আয়াত=১৪৪১ (২০১৯)
এভাবে, আয়াত গুলী সাজিয়েছি শুধু।
১৪+৪২= ১৪৪২ হিজরি (২০২০ ঈসায়ী সাল)
১৪+৪৩= ১৪৪৩ হিজরি (২০২১ ঈসায়ী সাল)
১৪+৪৪= ১৪৪৪ হিজরি (২০২২ ঈসায়ী সাল)
১৪+৪৫= ১৪৪৫ হিজরি (২০২৩ ঈসায়ী সাল)
১৪+৪৬= ১৪৪৬ হিজরি (২০২৪ ঈসায়ী সাল)
১৪+৪৭= ১৪৪৭ হিজরি (২০২৫ ঈসায়ী সাল)
১৪+৪৮= ১৪৪৮ হিজরি (২০২৬ ঈসায়ী সাল)
১৪+৪৯= ১৪৪৯ হিজরি (২০২৭ ঈসায়ী সাল)
১৪+৫০= ১৪৫০ হিজরি (২০২৮ ঈসায়ী সাল)
১৪+৫১= ১৪৫১ হিজরি (২০২৯ ঈসায়ী সাল)
১৪+৫২= ১৪৫২ হিজরি (২০৩০ ঈসায়ী সাল)
আপনি এটা জেনে চমকে উঠবেন জানি, সেটা হলো, এই আয়াতগুলোর বাস্তবায়ন হবে এই এই সালেই। যেমন ১৪নং সুরার ৪২ নং আয়াতে যা বলা হয়েছে তা ১৪+৪২=২০২০ সালে আমরা দেখতে পারবো।
তো কিভাবে? ব্যাখ্যা তো দেওয়া দরকার। কম জ্ঞান, কম বোঝার শক্তি ও অহংকার এর জন্য ইলহামি ভবিষ্যৎবাণী কাসিদা ও আগামি কথন আপনাদের অনেকের আকিদায় গিয়ে ঠেকে যায়, আসা করি এই ব্যাখ্যায় কোন সমস্যা হবে না। একটু তাফসীর এর সাহায্য ও হাদিস এর সাহায্যও নিবো এটি বুঝার জন্য। আর এই ব্যাখ্যা ও কথা আপনাদের একটু কষ্ট দিবেই, সে জন্য আমি দুঃখিত।
২০১৯ সালের জন্যই আগে শুরু করি,
___________________________________________
১৪+৪১=১৪৪১ হিজরি (২০১৯ সাল) এর ব্যাখ্যাঃ
সূরা ইব্রাহীম এর ৪১ নং আয়াতে বলা আছে-
অনুবাদঃ
হে আমাদের প্রতিপালক! হিসাব গ্রহণের দিন আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে আর মু’মিনদেরকে ক্ষমা করে দিও,
সংক্ষিপ্ত তাফসিরঃ
[১] সবশেষে একটি ব্যাপক অর্থবোধক দো’আ করলেন,
‘হে আমার রব! আমাকে আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন ঐদিন, যেদিন হাশরের ময়দানে সারাজীবনের কাজকর্মের হিসাব নেয়া হবে। এতে তিনি মাতা-পিতার জন্যও মাগফেরাতের দো'আ করেছেন। অথচ পিতা অর্থাৎ আযর যে কাফের ছিল, তা কুরআনুল কারীমেই উল্লেখিত রয়েছে। সম্ভবতঃ এ দো’আটি তখন করেছেন, যখন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-কে কাফেরদের জন্য দো’আ করতে নিষেধ করা হয়নি। [ইবন কাসীর]
আরেকটু তাফসীর থেকেঃ
তিনি আরো দু‘আ করলেন তাঁর জন্য এবং তাঁর সন্তানদের জন্য যেন তাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা মূর্তি পূজা থেকে বাঁচিয়ে রাখেন। এখানে তৎকালীন মক্কার মুশরিকদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হয়েছে। তারা দাবী করত আমরা ইবরাহীমের মিল্লাতের অনুসারী, ইবরাহীম (عليه السلام) তো প্রতিমা পূজারী ছিলেন না, তিনি কাবা নির্মাণ করলেন তাওহীদের ওপর ভিত্তি করে। ভবিষ্যতে কখনো যাতে শির্ক না হয় সে জন্য তিনি আল্লাহ তা‘আলার কাছে দু‘আ করলেন যেন তিনি তাঁকে ও তাঁর সন্তানদেরকে শির্ক থেকে রক্ষা করেন। অথচ তোমরা কাবা ঘরে মূর্তি রেখে পূজা করছ আর বলছ, আমরা ইবরাহীম (عليه السلام) এর অনুসারী।
ব্যাখ্যাঃ
তো, পিতা অর্থাৎ আযর যে কাফের ছিল। তার জন্য শেষ পর্যন্ত দুয়া করা ছাড়া উপায় ছিল না। কারণ আল্লাহ যাকে চায় তাকে হিদায়েত দেন। সে চাইলেও হিদায়ত দিতে পারবেন না।আর এখন কার সময়ে কাফিরদের জন্য দোয়া করতে কুরআনে নিষেধ করেছে। তো এর সাথে আমাদের চারপাশের একটা মিল আছে। মুসলিম নামধারি কাফির, মুশরিক, মুনাফিক, নাস্তিক রা হয়েছে। এরাও তো পরিবারের, সমাজেরই লোক জন। তো এদের জন্য দোয়া করতে নিষেধ করেছে কুরআনে। তাই আমরা ইবরাহীম (আঃ) এর মত যেটি পারি তা হলো তাগুত, কুফুরি, শিরক বর্জন করে চলা। এজন্য আমাদের এ থেকে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে ইসলামের মূল পথে চলতে হবে।
তো এই থেকে কি বুঝা যায়? এইটাই সেই সময় অর্থাৎ সাল যখন আপনাকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে শিরক থেকে, কুফুরি থেকে।
বাসায় আজ নামাজ পড়লে কথা বলবে, দাড়ি রাখলে। সমাজে ইসলাম নিয়ে চলা যায় না। চারিদিকেই শুধু পূজা আর পূজা। মানুষের পূজা না হয় মূর্তির। যেমন ফুল দেওয়া, না করলে বাধ্য করে।
আর সামনে যে জিহাদ ছাড়া উপায় থাকবে না তাও জানা দরকার। এ নিয়ে তো কথাই বলা যায় না। তো এই সেই বছর হতে পারে যখন বাচতে হলে জিহাদ লাগবে ও জামাত বদ্ধ হতে হবে। তা নাহলে আপনি আগামিতে ধ্বংস হবেন।
এর জন্য আপনাকে এরকম সময়েই সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে হতে পারে। কারণ পরিবার আত্মীয়র চেয়ে ইসলামের প্রতি বেশি ভালবাসা দরকার।
আপনি, সামনে যে দিন আসছে বা ইসলামের কোন বিষয় নিয়ে বাসায় মানাতে পারেন না, সমাজকে মানাতে পারেন না। আপনি বরং দোষী হয়ে যান। জিহাদ নিয়ে বললে জঙ্গি হয়ে যান। আপনার মা বাবা আজ বাধা দেয়। তাদের সাথে আল্লাহ ও রসুলের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন করার সময় এই সাল, হিজরি।
মুসলিম উম্মাহ এর কথা বললে আপনার স্ত্রী বলে তাতে তোমার কি? তার সাথেও আল্লাহ ও রসুলের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন করার সময় এই সাল, হিজরি। আপনি মেয়ে আর আপনার বর, স্বামী এইসব থেকে দূরে নিজেকে মুশরিক ও কাফির বানিয়ে ফেলেছে। তার সামনে এসব বিষয় নিয়ে বললে দুনিয়াবি জিনিসে লেগে যায়। আপনাকেও তার সাথে আল্লাহ ও রসুলের জন্য সম্পর্ক ছিন্ন করার সময় এই সাল, হিজরি।
কারণ কি জানেন? কিছু মানুষ জানে সামনে কি হতে চলেছে। আর হিজরি সাল গুলোর ব্যাখ্যা আয়াত দিয়ে করলেই বুঝা যাবে সামনে কি হতে চলেছে। তাই পরের গুলো পড়ুন।
___________________________________________
(সূরা নং+আয়াত) ১৪+৪২=১৪৪২ হিজরি (২০২০ সাল) এর ব্যাখ্যাঃ
সূরা ইব্রাহীম এর ৪২ নং আয়াতে বলা আছে-
অনুবাদঃ
যালিমরা যা করছে সে ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে কক্ষনো উদাসীন মনে কর না। তিনি তাদেরকে সেদিন পর্যন্ত ঢিল দিচ্ছেন যেদিন ভয়ে আতঙ্কে চক্ষু স্থির হয়ে যাবে।
সংক্ষিপ্ত তাফসিরঃ ৪২-৪৩ নং আয়াতের তাফসীরকে মিলিয়ে পাওয়া:
অনেকে মনে করতে পারে দুনিয়াতে কাফির, মুশরিক ও জালিমরা মানুষের ওপর এত অত্যাচার, অবিচার করছে তারপরেও তারা সুখ-সাচ্ছন্দে আছে, তারাই দুনিয়াতে ক্ষমতাসীন ইত্যাদি। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্বোধন করে আল্লাহ তা‘আলা সকল মানুষকে অবগত করছেন যে, তিনি জালিম কাফিরদের সকল কাজ সম্পর্কে জ্ঞাত আছেন। তারা কী করছে, না করছে সব তাঁর জ্ঞানায়ত্ত্বে। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে অবকাশ দিয়েছেন সেদিন পর্যন্ত যেদিন তাদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। অর্থাৎ কিয়ামতের ভয়াবহতা দেখে তাদের চোখের পলক পড়বে না, এত কঠিন অবস্থা হবে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَاقْتَرَبَ الْوَعْدُ الْحَقُّ فَإِذَا هِيَ شَاخِصَةٌ أَبْصَارُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا)
“যখন সত্য প্রতিশ্রুতির সময় ঘনিয়ে আসবে তখন অকস্মাৎ কাফিরদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে।” (সূরা আম্বিয়া ২১:৯৭)
(مُهْطِعِيْنَ) অর্থ ছোটাছুটি করা, দৌড়াদৌড়ি করা। অর্থাৎ এ সকল জালিমরা কবর থেকে উঠে আল্লাহ তা‘আলার ডাকে সাড়া দিয়ে হাশরের ময়দানের দিকে দ্রুত দৌড়াবে। তাদের দৃষ্টি থাকবে উপরের দিকে। ভয়ে তাদের চোখ নিচের দিকে নামবে না এবং অন্তর জ্ঞানশূন্য হয়ে যাবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(مُّهْطِعِيْنَ إِلَي الدَّاعِ)
“তারা আহ্বানকারীর দিকে ছুটে আসবে।” (সূরা ক্বমার ৫৪:৮)
জালিম কাফিরদের অবস্থা খুবই ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। সেদিন তাদের অন্তর ভয়ে জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়বে। ভয় ও আতঙ্ক ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।
আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. মানুষকে অপরাধের কারণে তাৎক্ষণিক শাস্তি না দেয়ার অর্থ এই নয় যে, আল্লাহ তা‘আলা তার সম্পর্কে জানেন না, বরং এটা তাদের জন্য অবকাশ দেয়া মাত্র।
২. মানুষ দ্রুতগতিতে কবর থেকে বের হয়ে সামনের দিকে ছুটে যাবে এবং তারা হবে অত্যন্ত ভীত-বিহ্বল।
ব্যাখ্যাঃ আসলে ভাই আপনি সচেতন হলে এটা অবশ্যই জানেন যে জালিম রা মূলত কাদের উপর জুলুম করে। তারা ইসলামের আর মুসলিমদের শত্রু। আর সব কাফির, ধর্ম এক জাতের ভাই ভাই। যাই সে হোক মালায়ন হিন্দু, ইয়াহুদি, খ্রিস্টান।
তো ১৪৪২ হিজরি বলতে ২০২০ সালকে বুঝায়। আপনারা এই ১৪৪১ হিজরি বছরের শুরুতেই দেখতে পাচ্ছেন যে পাশের ভারতে কি হচ্ছে।
আর এটা আরো বাড়বে তার পরের বছরগুলোতে। এমনকি জালিমরা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে মুসলিম নিধনে লেগে যাবে। শেষ মাত্রায় পৌঁছাবে। কিন্তু আল্লাহ সেই বছরটিতেও সাহায্য করবেন না মুসলিমদের। কারণ এটি তাদের কৃতকরমের ফল।
আর এরপর মানুষ মনে করবে আল্লাহ কেন এত পাপাচার করতে দিচ্ছেন জালিমদের। কিন্তু আল্লাহ এইখানে স্পষ্ট বলেছেন যে তিনি ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। তারাও তাদের কৃতকর্মের ফল পাবেই।
তো বুঝলেন যে আপনার কাছেও এই জালিমের জুলুম সামনেই এসে হাজির হবে। আপনি এখনই তা টের পাচ্ছেন আমি জানি তবে সামনে আরো ভয়াবহ হবে। পরেরটির ব্যাখ্যা দেখি চলেন।
___________________________________________
(সূরা নং+আয়াত) ১৪+৪৩=১৪৪৩ হিজরি (২০২১ সাল) এর ব্যাখ্যাঃ
সূরা ইব্রাহীম এর ৪৩ নং আয়াতে বলা আছে-
অনুবাদঃ
আতঙ্কিত হয়ে মাথা তুলে পালাতে থাকবে, দৃষ্টি তাদের নিজেদের পানে ফিরে আসবে না, আর তাদের দিল উড়ে যাবে।
সংক্ষিপ্ত তাফসিরঃ ৪২-৪৩ নং আয়াতের তাফসীরকে মিলিয়ে পাওয়া:
ব্যাখ্যাঃ এটির তাফসীর আগেই দেওয়া হয়েছে। তো আয়াতে বলেছে, জালিমরা সেদিন আতঙ্কিত হয়ে মাথা তুলে পালাতে থাকবে, দৃষ্টি তাদের নিজেদের পানে ফিরে আসবে না, আর তাদের দিল উড়ে যাবে। এইখানে জালিম আমরাই। আমরাই নিজেদের উপর জুলুম করতেছি।এ দিয়ে বুঝায় যে সেই হিজরি সালেও চলবে গণহত্যা, মুসলিম নিধন। আর আপনি তাতে বাচবেন কিনা জানিনা। জালিমরা সেই হিজরিতেও জুলুম চালিয়ে যেতে থাকবে। এটি থামবে আবার শুরু হবে আগের থেকেও ভয়াবহ হয়ে। আপনি যদি তাগুত বর্জন না করেন সেদিন আপনিও ধরা খাবেন আর নিজেকে যদি নিরাপদ স্থানে নিতে না পারেন তাহলেও। যারা জিহাদকে অস্বীকার করে থাকি সেদিন তারাও নিজেদের বাচানোর জন্য চেষ্টা করবে, তবে পারবে না।
___________________________________________
(সূরা নং+আয়াত) ১৪+৪৪=১৪৪৪ হিজরি (২০২২ সাল) এর ব্যাখ্যাঃ
সূরা ইব্রাহীম এর ৪৪ নং আয়াতে বলা আছে-
অনুবাদঃ
আর যেদিন তাদের শাস্তি আসবে সেদিন সম্পর্কে আপনি মানুষকে সতর্ক করুন, তখন যারা যুলুম করেছে তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে কিছু কালের জন্য অবকাশ দিন, আমরা আপনার ডাকে সাড়া দেব এবং রাসূলগণের অনুসরণ করব।‘ তোমরা কি আগে শপথ করে বলতে না যে, তোমাদের পতন নেই ?
সংক্ষিপ্ত তাফসিরঃ
এসব অবস্থা বর্ণনা করার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলা হয়েছে যে, আপনি আপনার জাতিকে ঐ দিনের শাস্তির ভয় প্রদর্শন করুন, যেদিন যালিম ও অপরাধীরা অপারগ হয়ে বলবেঃ হে আমাদের রব! আমাদেরকে আরো কিছুদিন সময় দিন। অর্থাৎ দুনিয়াতে কয়েকদিনের জন্য পাঠিয়ে দিন, যাতে আমরা আপনার দাওয়াত কবুল করতে পারি এবং আপনার প্রেরিত নবীগণের অনুসরণ করে এ আযাব থেকে মুক্তি পেতে পারি। অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা’আলা কাফেরদের এ অবস্থা বর্ণনা করে বলছেন,
“আর আপনি যদি দেখতেন! যখন অপরাধীরা তাদের রবের নিকট অবনত মস্তকে বলবে, ‘হে আমাদের রব! আমরা দেখলাম ও শুনলাম, সুতরাং আপনি আমাদেরকে ফেরত পাঠান, আমরা সৎকাজ করব, নিশ্চয় আমরা দৃঢ় বিশ্বাসী।" [সূরা আস-সাজদাহ ১২]
আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে তাদের আবেদনের জবাবে বলা হবেঃ এখন তোমরা একথা বলছ কেন? তোমরা কি ইতিপূর্বে কসম খেয়ে বলনি যে, তোমাদের ধন-সম্পদ ও শান-শওকতের পতন হবে না এবং তোমরা সর্বদাই দুনিয়াতে এমনিভাবে বিলাস-ব্যসনে মত্ত থাকবে? তোমরা পুনর্জীবন ও আখেরাত অস্বীকার করে আসছিলে। অন্য আয়াতেও কাফেরদের এ আবদার ও তার জবাব বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে,
“অবশেষে যখন তাদের কারো মৃত্যু আসে, সে বলে, 'হে আমার রব! আমাকে আবার ফেরত পাঠান, ‘যাতে আমি সৎকাজ করতে পারি যা আমি আগে করিনি।‘ না, এটা হবার নয়। এটা তো তার একটি বাক্য মাত্র যা সে বলবেই" [সূরা আল-মুমিনূন: ৯৯-১০০]
ব্যাখ্যাঃ যালিম ও অপরাধীরা, দুইদিকের কথাই বলা হয়েছে। আমরাও জালিম ও অপরাধী। আমরা নিজেদের উপর জুলুম করছি। ইসলামে কে বর্জন করে শিরক আর কুফুরিতে লিপ্ত। আমাদের কে মারার পর যে আমরা জান্নাতে চলে যাবো তা না। আমাদের জন্য দুনিয়ার আজাব যথেষ্ট ছিল না। আমাদের পাপের ফলাফল জাহান্নামই হবে। আর যারা আমাদের নিধন করবে তাদেরও একই পরিনতি হবে।
যদি মনে করেন যে তারা মারল, আমি তো মুসলিম শহিদ হলাম। তাহলে ভুল ছাড়া কিছুই না। এথেকে বোঝা যায় ১৪৪৪ হিজরি (২০২২ সাল) ও সেই করুণ অবস্থা চলতে থাকবে। আর তার সাথে কি ঘটবে জানেন? সত্যের সৈনিকরাও সেদিন প্রতিবাদের জন্য থাকবে। যালিমরাও সেদিন মারা পরবে। সেই কাঙ্ক্ষিত হিন্দের যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে পুরো আকারে। আর এই জুলুম এই দেশেই এসে সব চেয়ে মারাত্মক আকার ধারন করবে এমনটাই আসা। ঘোর কারবালা সেদিন হবে এই ভুমি। কিন্তু সত্যের সৈনিকরা সেদিন বেচে যাবে। এরকম এই সময়েই হচ্ছে যারা আগে থেকেই বেরিয়ে পড়েছে। আর যারা বের হয়নি তাদের অবস্থা দেখতে হলে ভারতের দিকে তাকান। আর যদি তখনও তাগুত, শিরক বর্জন না করতে পারেন তাহলে ইহকালেই আজাবে পতিত হতে হবে। আর পরকালের চিন্তা যারা করেনই না তারা অন্তত ইহকালে বাচার চেষ্টা করবে। কিন্তু তাও পারবে না। তারাই জাহান্নামি।
___________________________________________
(সূরা নং+আয়াত) ১৪+৪৫=১৪৪৫ হিজরি (২০২৩ সাল) এর ব্যাখ্যাঃ
সূরা ইব্রাহীম এর ৪৫ নং আয়াতে বলা আছে-
অনুবাদঃ
অথচ তোমরা সেই লোকগুলোর বাসভূমিতে বসবাস করছিলে যারা নিজেদের প্রতি যুলম করেছিল আর তোমাদেরকে স্পষ্ট করে দেখিয়ে দেয়া হয়েছিল আমি তাদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেছিলাম। আর আমি বহু উদাহরণ টেনে তোমাদেরকে বুঝিয়েও দিয়েছিলাম।
তাফসিরঃ
[১] এতে তাদেরকে হুশিয়ার করা হয়েছে যে, অতীত জাতিসমূহের অবস্থা ও উত্থান-পতন তোমাদের জন্য সর্বোত্তম উপদেশ। আশ্চর্যের বিষয়, তোমরা এগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ কর না। অথচ তোমরা এসব ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির আবাসস্থলেই বসবাস ও চলাফেরা কর। কিছু অবস্থা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এবং কিছু সংবাদ পরস্পরের মাধ্যমে তোমরা একথাও জান যে, আল্লাহ তা'আলা অবাধ্যতার কারণে ওদেরকে কিরূপ কঠোর শাস্তি দিয়েছেন। এছাড়া আল্লাহ তাদেরকে সৎপথে আনার জন্য অনেক দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন কিন্তু এরপরও তাদের চৈতন্যোদয় হয়নি। আল্লাহ বলেন, “এটা পরিপূর্ণ হিকমত, কিন্তু ভীতিপ্রদর্শন তাদের কোন কাজে লাগেনি।” [সূরা আল-কামার:৫][ইবন কাসীর]
আহসানুল বয়ান থেকেঃ
[১] অর্থাৎ, উপদেশ গ্রহণ করার জন্য আমি তো পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের ঘটনা বর্ণনা করে দিয়েছি, যাদের বাড়ি-ঘরে এখন তোমরা বসবাস করছ এবং তাদের জীর্ণ বাড়ি-ঘরও তোমাদেরকে চিন্তা-ভাবনা করতে উদ্বুদ্ধ করছে। যদি তোমরা এ থেকে উপদেশ গ্রহণ না কর এবং তাদের পরিণাম থেকে বাঁচার জন্য চিন্তা-ভাবনা না কর, তাহলে তোমাদের মর্জি। সুতরাং তোমরাও অনুরূপ পরিণামের জন্য প্রস্তুত থাকো।
ব্যাখ্যাঃ
এই ২০২৩ সালেই কিছু বড় বড় নিদর্শন মানুষ দেখতে পারবে। এই সেই বছর যেই বছর ফুরাত নদীতে স্বর্ণের পাহাড় ভেসে উঠবে। কারণ সিরিয়া যুদ্ধের ১২ বছর পর হলে ২০১১ থেকে ১২ বছর পর ২০২৩ সাল হয়। যা হাদিসে এসেছে। আরো বলেছে- "এতে তাদেরকে হুশিয়ার করা হয়েছে যে"। নবী(স:) আগেই এ ব্যাপারে আগেই হুশিয়ার করেছে যে, সেখানে যেন কেউ না যায় কারণ সেখানে নয় জনের সাত জনই মারা পরবে।
আর এই মহাভারতেও চলতে থাকবে সত্য মিথ্যার লড়াই। সেই গণহত্যা থেমে নেই। আর অতীতের মতো এইগুলোও পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাকবে। এর পর তাফসীরে আরো বলেছে, "আল্লাহ তাদেরকে সৎপথে আনার জন্য অনেক দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন কিন্তু এরপরও তাদের চৈতন্যোদয় হয়নি।"
এ থেকে কি বুঝবেন তা আপনারাই ভালো জানেন। তাফসীর ইবনে কাসীর থেকে পাওয়া। আমার কিছু বানানোর দরকার পরেনি।
এ থেকে কি বুঝবেন তা আপনারাই ভালো জানেন। তাফসীর ইবনে কাসীর থেকে পাওয়া। আমার কিছু বানানোর দরকার পরেনি।
হাদিসঃ
** বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, চতূর্থ ফিৎনা হচ্ছে, অন্ধকার অন্ধত্বপূর্ন ফিৎনা। যা সমুদ্রের ঢেউয়ের ন্যায় উত্তাল হয়ে উঠবে, আরব অনারবের কোনো ঘর বাকি থাকবেনা, যেখানে উক্ত ফিৎনা প্রবেশ করবেনা? এই ফিতনা দ্বারা মুসলমানেরা লাঞ্ছিত অপদস্ত হতে থাকবে। ফিৎনাটি শাম দেশে (সিরিয়ায়) চক্কর দিতে থাকলেও রাত্রিযাপন করবে ইরাকে। তার হাত পা দ্বারা আরব ভুখন্ডের ভিতরে বিচরন করতে থাকবে। উক্ত ফিৎনা এ উম্মতের সাথে চামড়ার সাথে চামড়া মিশ্রিত হওয়ার ন্যায় মিশে যাবে, তখন বালা মুসিবত এত ব্যাপক ও মারাত্নক আকার ধারন করবে যা দ্বারা মানুষ ভালো খারাপ নির্ণয় করতে পারবেনা। ঐ মুহুর্তে কেউ উক্ত ফিৎনা থামানোর সাহস ও রাখবেনা। একদিকে একটু শান্তির সুবাতাস বইলেও অন্যদিকে ফিৎনা তীব্র আকার ধারন করবে। সকালবেলা কেউ মুসলমান থাকলেও সন্ধা হতে হতে সে কাফের হয়ে যাবে। উক্ত ফিৎনা থেকে কেউ বাঁচতে পারবেনা। কিন্তু শুধু ঐ লোক বাঁচতে পারে, যে সমুদ্রে ডুবন্ত ব্যক্তির ন্যায় করুন সুরে আকুতি জানাতে থাকে। সেটা প্রায় ১২ বৎসর পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে এবং এক পর্যায়ে সকলের কাছে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ইতোমধ্যে ফুরাত নদীতে স্বর্নের একটি ব্রিজ (পাহাড়) প্রকাশ পাবে। যা দখল করার জন্য সকলে যুদ্ধে জড়িয়ে যাবে এবং প্রতি নয় জনের সাতজন মারা পড়বে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৬৭৬ ]
** হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন চতূর্থ ফিতনা বা যুদ্ধ ১২ বছর স্থায়ী হবে। যখন অবসান হবে তখন অবসান হবে। ( অর্থাৎ ১২ বছর সময় শেষ হবে তারপর) স্বর্ণের পাহাড় থেকে ফুরাতকে খুলে দেওয়া হবে। অতপর তার উপর প্রত্যেক নয় জনের সাত জনকে হত্যা করা হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৭০ ]
** হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন,“অদূর ভবিষ্যতে ফোরাত সোনার ভাণ্ডার উন্মুক্ত করে দেবে। সে সময়ে এ ওখানে উপস্থিত থাকবে, সে যেন তার থেকে কিছুই গ্রহণ না করে”।
(সহিহ বুখারি, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ২৬০৫; সুনানে তিরমিজি, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৬৯৮)
** হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “সেই পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না ফোরাত থেকে সোনার পাহাড় বের হবে। তার জন্য মানুষ যুদ্ধ করবে এবং প্রতি একশ জনে নিরানব্বই জন লোক মারা যাবে। যে কজন জীবনে রক্ষা পাবে, তারা প্রত্যেকে মনে করবে, বোধ হয় একা আমিই জীবিত আছি”।
(সহিহ মুসলিম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২২১৯)
___________________________________________
(সূরা নং+আয়াত) ১৪+৪৬=১৪৪৬ হিজরি (২০২৪ সাল) এর ব্যাখ্যাঃ
সূরা ইব্রাহীম এর ৪৬ নং আয়াতে বলা আছে-
অনুবাদঃ
তারা যে চক্রান্ত করেছিল তা ছিল সত্যিই ভয়ানক, কিন্তু তাদের চক্রান্ত আল্লাহর দৃষ্টির ভিতরেই ছিল, যদিও তাদের চক্রান্তগুলো এমন ছিল না যে, তাতে পর্বতও টলে যেত।
তাফসীরঃ
[১] এটা অবস্থা বর্ণনামূলক বাক্য। অর্থাৎ, আমি তাদের সাথে যা করলাম তা করলাম, অথচ অবস্থা এই যে, তারা বাতিলকে সাব্যস্ত এবং সত্যকে খন্ডন করার জন্য সর্বশক্তি ব্যয় পূর্বক কৌশল ও চক্রান্ত করল। আর আল্লাহর কাছে এসব চক্রান্তের জ্ঞান আছে; অর্থাৎ তাঁর কাছে লিপিবদ্ধ আছে যার শাস্তি তিনি তাদেরকে দেবেন।
[২] কেননা যদি পাহাড় টলে যেত, তাহলে তা স্বস্থানে থাকতো না, অথচ সমস্ত পাহাড় স্ব স্ব স্থানে অটল রয়েছে। এ হল إنْ নেতিবাচক مَا এর অর্থ। দ্বিতীয় অর্থ إنْ মূলতঃ إنَّ ছিল। অর্থাৎ নিশ্চয় তাদের চক্রান্ত এত বড় ছিল যে, তার ফলে পাহাড়ও স্বস্থান থেকে সরে যেত! তিনি তো মহান আল্লাহই যিনি তাদের চক্রান্তকে সফল হতে দেননি। যেমন মহান আল্লাহ কাফেরদের সম্বন্ধে বলেছেন, ﴿تَكَادُ السَّمَاوَاتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا. أَن دَعَوْا لِلرَّحْمَنِ وَلَدًا﴾ অর্থাৎ, এতে যেন আকাশ সমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হবে ও পর্বতসমূহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। যেহেতু তারা পরম দয়াময়ের উপর সন্তান আরোপ করে। (সূরা মারয়্যাম ১৯:৯০-৯১) (Ahsanul Bayan)
[২] কেননা যদি পাহাড় টলে যেত, তাহলে তা স্বস্থানে থাকতো না, অথচ সমস্ত পাহাড় স্ব স্ব স্থানে অটল রয়েছে। এ হল إنْ নেতিবাচক مَا এর অর্থ। দ্বিতীয় অর্থ إنْ মূলতঃ إنَّ ছিল। অর্থাৎ নিশ্চয় তাদের চক্রান্ত এত বড় ছিল যে, তার ফলে পাহাড়ও স্বস্থান থেকে সরে যেত! তিনি তো মহান আল্লাহই যিনি তাদের চক্রান্তকে সফল হতে দেননি। যেমন মহান আল্লাহ কাফেরদের সম্বন্ধে বলেছেন, ﴿تَكَادُ السَّمَاوَاتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا. أَن دَعَوْا لِلرَّحْمَنِ وَلَدًا﴾ অর্থাৎ, এতে যেন আকাশ সমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হবে ও পর্বতসমূহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। যেহেতু তারা পরম দয়াময়ের উপর সন্তান আরোপ করে। (সূরা মারয়্যাম ১৯:৯০-৯১) (Ahsanul Bayan)
তাফসিরঃ জাকারিয়া থেকে-
[১] অর্থাৎ তিনি তাদের যাবতীয় চক্রান্ত বেষ্টন করে আছেন। তিনি সেগুলোকে পুনরায় তাদের দিকে তাক করে দিয়েছেন। আবার তিনি সেগুলোর বিনিময়ে তাদের শাস্তি দিবেন।
[২] অধিকাংশ তাফসীরবিদ (وَاِنْ كَانَ مَكْرُهُمْ) বাক্যের (اِنْ) শব্দটি নেতিবাচক অব্যয় সাব্যস্ত করে অর্থ করেছেন যে, তারা যদিও অনেক কূটকৌশল ও চালবাজি করেছে, কিন্তু তাতে পাহাড়ের স্বস্থান থেকে হটে যাওয়া সম্ভবপর ছিল না। [ইবন কাসীর] অর্থাৎ তারা সত্যদ্বীনকে বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে এবং সত্যের দাওয়াত কবুলকারী মুসলিমদের নিপীড়নের উদ্দেশ্যে সাধ্যমত কূটকৌশল করেছে। আল্লাহ্ তা'আলার কাছে তাদের সব গুপ্ত ও প্রকাশ্য কূটকৌশল বিদ্যমান রয়েছে। তিনি এগুলো সম্পর্কে ওয়াকিফহাল এবং এগুলোকে ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম। তাদের কুটকৌশল এমন বড় কিছু নয় যে, পাহাড় টলে যাবে। সে অনুসারে তাদের যাবতীয় কুটকৌশলের হীনতা ও দূর্বলতা বর্ণনা করাই এখানে উদ্দেশ্য। অন্য আয়াতে এ অর্থে বলা হয়েছে, "ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করবেন না; আপনি তো কখনই পদভরে ভূপৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবেন না এবং উচ্চতায় আপনি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবেন না।"[সূরা আল-ইসরাঃ৩৭] [ইবন কাসীর]
আয়াতের দ্বিতীয় আরেকটি অর্থ হলো, “যদিও তাদের কূটকৌশল এমন মারাত্মক ও গুরুতর ছিল যে, এর মোকাবেলায় পাহাড়ও স্বস্থান থেকে অপসৃত হবে।" [কুরতুবী] কিন্তু আল্লাহর অপার শক্তির সামনে এসব কূটকৌশল ব্যর্থ হয়ে গেছে। আয়াতে বর্ণিত শত্রুতামূলক কূটকৌশলের অর্থ অতীতে ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিসমূহের কূটকৌশলও হতে পারে। উদাহরণতঃ নমরূদ, ফির’আওন, কওমে-আদ, কওমে সামূদ ইত্যাদি। এটাও সম্ভব যে, এতে আরবের বর্তমান মুশরিকদের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে যে, তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মোকাবেলায় অত্যন্ত গভীর ও সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত ও কূটকৌশল করেছে। কিন্তু আল্লাহ্ তা’আলা সব ব্যর্থ করে দিয়েছেন।
আয়াতে উল্লেখিত (مكر) শব্দের অর্থ কোন কোন মুফাসসিরের মতে, শির্ক ও রাসূলদের উপর মিথ্যারোপ। [কুরতুবী] অর্থাৎ তাদের শির্ক ও রাসূলের উপর মিথ্যারোপ মারাত্মক আকার ধারণ করলেও আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিফহাল। অন্য আয়াত থেকেও এ অর্থের সমর্থন পাওয়া যায়, অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, শির্ক করার কারণে আকাশ ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়। [সূরা মারইয়ামঃ ৯০][ইবন কাসীর]
[২] অধিকাংশ তাফসীরবিদ (وَاِنْ كَانَ مَكْرُهُمْ) বাক্যের (اِنْ) শব্দটি নেতিবাচক অব্যয় সাব্যস্ত করে অর্থ করেছেন যে, তারা যদিও অনেক কূটকৌশল ও চালবাজি করেছে, কিন্তু তাতে পাহাড়ের স্বস্থান থেকে হটে যাওয়া সম্ভবপর ছিল না। [ইবন কাসীর] অর্থাৎ তারা সত্যদ্বীনকে বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে এবং সত্যের দাওয়াত কবুলকারী মুসলিমদের নিপীড়নের উদ্দেশ্যে সাধ্যমত কূটকৌশল করেছে। আল্লাহ্ তা'আলার কাছে তাদের সব গুপ্ত ও প্রকাশ্য কূটকৌশল বিদ্যমান রয়েছে। তিনি এগুলো সম্পর্কে ওয়াকিফহাল এবং এগুলোকে ব্যর্থ করে দিতে সক্ষম। তাদের কুটকৌশল এমন বড় কিছু নয় যে, পাহাড় টলে যাবে। সে অনুসারে তাদের যাবতীয় কুটকৌশলের হীনতা ও দূর্বলতা বর্ণনা করাই এখানে উদ্দেশ্য। অন্য আয়াতে এ অর্থে বলা হয়েছে, "ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করবেন না; আপনি তো কখনই পদভরে ভূপৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবেন না এবং উচ্চতায় আপনি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবেন না।"[সূরা আল-ইসরাঃ৩৭] [ইবন কাসীর]
আয়াতের দ্বিতীয় আরেকটি অর্থ হলো, “যদিও তাদের কূটকৌশল এমন মারাত্মক ও গুরুতর ছিল যে, এর মোকাবেলায় পাহাড়ও স্বস্থান থেকে অপসৃত হবে।" [কুরতুবী] কিন্তু আল্লাহর অপার শক্তির সামনে এসব কূটকৌশল ব্যর্থ হয়ে গেছে। আয়াতে বর্ণিত শত্রুতামূলক কূটকৌশলের অর্থ অতীতে ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিসমূহের কূটকৌশলও হতে পারে। উদাহরণতঃ নমরূদ, ফির’আওন, কওমে-আদ, কওমে সামূদ ইত্যাদি। এটাও সম্ভব যে, এতে আরবের বর্তমান মুশরিকদের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে যে, তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মোকাবেলায় অত্যন্ত গভীর ও সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত ও কূটকৌশল করেছে। কিন্তু আল্লাহ্ তা’আলা সব ব্যর্থ করে দিয়েছেন।
আয়াতে উল্লেখিত (مكر) শব্দের অর্থ কোন কোন মুফাসসিরের মতে, শির্ক ও রাসূলদের উপর মিথ্যারোপ। [কুরতুবী] অর্থাৎ তাদের শির্ক ও রাসূলের উপর মিথ্যারোপ মারাত্মক আকার ধারণ করলেও আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিফহাল। অন্য আয়াত থেকেও এ অর্থের সমর্থন পাওয়া যায়, অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, শির্ক করার কারণে আকাশ ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়। [সূরা মারইয়ামঃ ৯০][ইবন কাসীর]
ব্যাখ্যাঃ
২০২৪ সাল ১৪৪৬ হিজরি। কি হবে সেই বছর? আমি যা বলবো তা গল্প এর মত মনে হবে। তাই তৎক্ষণাৎ আমার গল্পটি পরে তাফসীর এ চোখ বুলাবেন বোঝার জন্য। ২০২৪ সাল যা হবে হিন্দের যুদ্ধের চূড়ান্ত সময় যখন জালিমরা তাদের চূড়ান্ত চক্রান্ত করবে যা পাহাড় কেও নাড়িয়ে দিতে পারত যদি আল্লাহ না সহায় করতো। তার কিছু আগে এই সময়টাতেই মাহমুদ নামের এক লোক জিহাদের ডাক দিবে। তাকেও মিথ্যারোপ করা হবে। এর ফল এই দেশের মানুষরা ভোগ করবেই। নাহলে যে সেই ইমাম মাহদি আসার আসার আগে তিন ভাগের দুই ভাগ মানুষ মারা যাবে, সেই হাদিসের বাস্তবায়ন হবে না। (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড - ৫২, পৃষ্ঠা - ১১৯, বিশারাতুল ইসলাম, পৃষ্ঠা - ১৫০, মুন্তাখাবুল আসার, পৃষ্ঠা - ৪২৫, মুজ'আম আল হাদিস আল ইমাম আল মাহদী, খন্ড - ৩, পৃষ্ঠা - ৪৭২)
আস্তে আস্তে সেটি বাস্তবায়ন হবেই আর এই মাহমুদ আসা মানেই মাহদির আসার সময় হয়ে গেছে বুঝতে হবে। সেই বছরে যা হবে তা কল্পনায় আনা কঠিন। আমি আর সেই ইলহামি কবিতা কাসিদা আর আগামি কথনের হুমকির কথা বলছিনা। তার ইঙ্গিত তাফসিরেই পেয়ে যাবেন। আর সেই সময় হবে যুদ্ধ। এমন যুদ্ধ যার কথা হাদিসে এসেছে। যাতে মুমিনদের বিজয়ে কথা বলা হয়েছে। যেই যুদ্ধে অংশগ্রহন কারিদের ফজিলত বর্ণনা এসেছে। সেটির সাল এই বছর ২০২৪।
হাদিসঃ
** হযরত আবু বাছির (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু আব্দুল্লাহ আস সাদিক (হযরত জাফর সাদিক রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম? কখন আল কায়েম (ইমাম মাহদী) আবির্ভাব হবে? তিনি বললেন আহলে বাইতের (রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বংশধর) জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় (উল্লেখ) নেই। তবে ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে ৫টি বিষয় ঘটবে। যেমনঃ ১,আকাশ থেকে আহ্বান। ২, সুফিয়ানীর উত্থান। ৩, খোরাসানের বাহিনীর আত্নপ্রকাশ। ৪, নিরপরাধ মানুষকে ব্যাপক হারে হত্যা করা। ৫, (বাইদার প্রান্তে) মরুভূমিতে একটি বিশাল বাহিনী ধ্বংসে যাবে।
ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে দুই ধরনের মৃত্যু দেখা যাবে। ১, শ্বেত মৃত্যু। ২,লাল মৃত্যু। শ্বেত মৃত্যু (দুর্ভিক্ষের কারনে মৃত্যু) হল মহান মৃত্যু। আর লাল মৃত্যু হল তরবারি (যুদ্ধের) কারনে মৃত্যু। আর আকাশ থেকে তিনি (হযরত জিব্রাইল (আঃ) তার (ইমাম মাহদীর) নাম ধরে আহ্বান করবে ২৩ ই রমজান শুক্রবার রাতে।
ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে দুই ধরনের মৃত্যু দেখা যাবে। ১, শ্বেত মৃত্যু। ২,লাল মৃত্যু। শ্বেত মৃত্যু (দুর্ভিক্ষের কারনে মৃত্যু) হল মহান মৃত্যু। আর লাল মৃত্যু হল তরবারি (যুদ্ধের) কারনে মৃত্যু। আর আকাশ থেকে তিনি (হযরত জিব্রাইল (আঃ) তার (ইমাম মাহদীর) নাম ধরে আহ্বান করবে ২৩ ই রমজান শুক্রবার রাতে।
(হাদিস বড় হওয়ায় সম্পূর্ণ হাদিস উল্লেখ করা হয়নি)
(বিহারুল আনোয়ার, খন্ড - ৫২, পৃষ্ঠা - ১১৯, বিশারাতুল ইসলাম, পৃষ্ঠা - ১৫০, মুন্তাখাবুল আসার, পৃষ্ঠা - ৪২৫, মুজ'আম আল হাদিস আল ইমাম আল মাহদী, খন্ড - ৩, পৃষ্ঠা - ৪৭২)
হযরত ফিরোজ দায়লামি (রাঃ)- থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আখেরী জামানায় ইমাম মাহদীর পূর্বে ইমাম মাহমুদ-এর প্রকাশ ঘটবে। সে বড় যুদ্ধের শক্তির যোগান দিবে। তার যামানায় মহাযুদ্ধের বজ্রাঘাতে বিশ্বের অধ্বঃপতন হবে এবং বিশ্ব এই সময়ে ফিরে আসবে। সে তার সহচর বন্ধু "সাহেবে কিরান বারাহ" কে সাথে নিয়ে যুদ্ধ পরিচালোনা করবে-যে বেলাল ইবনে বারাহ-এর বংশোদ্ভুত হবে। তোমরা তাদের পেলে জানবে ইমাম মাহদীর প্রকাশের সময় হয়েছে।
(আসরে যুহরি, ১৮৭ পৃঃ, তারিখে দিমাশাক, ২৩৩ পৃঃ, ইলমে তাছাউফ, ১৩০ পৃঃ, ইলমে রাজেন, ৩১৩ পৃঃ, বিহারুল আনোয়ার, ১১৭ পৃঃ)
___________________________________________
(সূরা নং+আয়াত) ১৪+৪৭=১৪৪৭ হিজরি (২০২৫ সাল) এর ব্যাখ্যাঃ
সূরা ইব্রাহীম এর ৪৭ নং আয়াতে বলা আছে-
অনুবাদঃ
(অবস্থা যতই প্রতিকূল হোক না কেন) তুমি কক্ষনো মনে কর না যে, আল্লাহ তাঁর রসূলগণকে দেয়া ওয়া‘দা খেলাপ করবেন, আল্লাহ মহা প্রতাপশালী, প্রবল প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
তাফসিরঃ
[১] এরপর উম্মতকে শোনানোর জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অথবা প্রত্যেক সম্বোধনযোগ্য ব্যক্তিকে হুশিয়ার করে বলা হয়েছেঃ “কেউ যেন এরূপ মনে না করে যে, আল্লাহ্ তা'আলা রাসূলগণের সাথে বিজয় ও সাফল্যের যে ওয়াদা করেছেন, তিনি তার খেলাফ করবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তা’আলা মহাপরাক্রান্ত এবং প্রতিশোধ গ্রহণকারী।" তিনি নবীগণের শক্রদের কাছ থেকে অবশ্যই প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন এবং ওয়াদা পূর্ণ করবেন। [বাগভী; কুরতুবী]। তিনি তাদেরকে দুনিয়াতেও সাহায্য করবেন, আখেরাতেও যেদিন সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে দাঁড়াবে সেদিনও তিনি তাদের সাহায্য করবেন। তিনি পরাক্রমশালী কোন কিছুই তার ক্ষমতার বাইরে নেই। তিনি যা ইচ্ছা করেন তা পূরণে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। [ইবন কাসীর]
ফাতহুল মাজিদ থেকে তাফসিরঃ
আল্লাহ তা‘আলা নিজের প্রতিশ্রুতিকে সুদৃঢ় ও মজবুত করে বলছেন: দুনিয়া ও আখেরাতে রাসূলদের সাহায্য করার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন তার বরখেলাফ হবে না। তাঁর ওপর কেউ জয়যুক্ত নয়, তিনি সবার ওপর জয়যুক্ত। তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ হয়, তিনি যা চান তাই হয়। তিনি অবশ্যই কাফিরদেরকে শাস্তি দেবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(إِنَّ اللّٰهَ لَا يُخْلِفُ الْمِيْعَادَ)
“নিশ্চয় আল্লাহ তার ওয়াদা ভঙ্গ করেন না।” (সূরা আলি-ইমরান-৩:৩৯)
আহসানুল বায়ান থেকে তাফসীরঃ
[১] অর্থাৎ, মহান আল্লাহ স্বীয় রসূলদের সাথে পৃথিবীতে সাহায্য করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা অবশ্যই সত্য, তাঁর তরফ থেকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হওয়া অসম্ভব।
[২] অর্থাৎ স্বীয় বন্ধুদের জন্য স্বীয় শত্রুদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
[২] অর্থাৎ স্বীয় বন্ধুদের জন্য স্বীয় শত্রুদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী।
ব্যাখ্যাঃ
২০২৫ সালে, ১৪৪৭ হিজরিতে আল্লাহ তার ওয়াদা পূর্ণ করবে আর প্রতিশোধ গ্রহণ করবে। আর আল্লাহ যখন প্রতিশোধ গ্রহণকারী তখন কি হতে পারে তা কি আপনার জানা আছে?
এই সেই সাল যে সময় মানুষ একে অপরের উপর অগ্নি( পারমাণবিক অস্র) নিক্ষেপ করবে। (গ্রন্থঃ তাজকিরাহ, লেখকঃ ইমাম কুরতুবী, আন নিহায়া ফিল ফিতান, লেখকঃ ইবনে কাসীর, আস সুনানু ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান, আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান, খণ্ড - ৪, পৃষ্ঠা - ৮৮৫)
দুই তৃতীয়াংশ মানুষ মারা যাবে আর এবছরেও এর সংখ্যা ভালই হবে। এবছর এক ভাগ মারা যাবে যুদ্ধ বিগ্রোহে। (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড ৫২,পৃষ্ঠা ১১৩, আসরে জুহুরী, পৃষ্ঠা নং - ১৯০)
এই বছর হবে সেই গাজওয়াতুল হিন্দের বিজয়। আল্লাহ এর পর কাফিরকে সমূলে ধ্বংস করবেন। থাকবে না এর পর আর কোনো পথভ্রষ্ট আলেম, না থাকবে নর্তকী, না থাকবে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা কোনো দল, না থাকবে নাস্তিক। আল্লাহ ইসলামকে বিজয়ী করবেন। তিনি জালিমদেরকে ধ্বংস করবেন। এই মহাভারত হবে মুসলিমদের। হিন্দের যুদ্ধের বিজয়ও এই সময়েই।
তাফসীরে আরো বলা হয়েছে- "স্বীয় বন্ধুদের জন্য স্বীয় শত্রুদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী"
যেহেতু এই যুদ্ধ এর আরো কিছুপর মাহ্দী আসবেন। তাহলে, তার বন্ধু কারা হবে সেদিন? আমি তো জানি। বললে আপনারা মতবিরোধ শুরু করে দিবেন। তাই তা আপনাদের জানাচ্ছি না।
কারা বাঁচবে তখন জানেন? যারা জিহাদ করেছিল আর প্রস্তুতি ছিল সেই আগের সালগুলো থেকেই যেগুলো আমি ব্যাখ্যা করেছি। তারাই বেঁচে যাওয়া এক ভাগের মধ্যে থাকবে। (বিহারুল আনোয়ার, খন্ড ৫২,পৃষ্ঠা ১১৩, আসরে জুহুরী, পৃষ্ঠা নং - ১৯০, হাদিসের মান: সহিহ, সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৩১৭৫)
গল্প মনে হলে তাফসীর পরে নিবেন আবার। হাদিসগুলি না দিলে আবার অনেকে অনেক কথা বলবে। নিচে তার কিছু দেওয়াও হয়েছে।
হাদিসগুলিঃ
* হযরত হুজায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, বিশ্বব্যাপী অধঃপতন শুরু হবে। এমনকি মিশর অধঃপতনের সম্মুখীন হবে। আর মিশর নিরাপদ থাকতেই বসরার(ইরাক) অধঃপতন হবে। বসরা(ইরাকের) অধঃপতন হবে ডুবে যাওয়ার কারনে। মিশরের অধঃপতন হবে নিলনদ শুকিয়ে যাওয়ার কারনে। মক্কা ও মদিনার অধঃপতন হবে ক্ষুধার কারনে। ইয়েমেনের অধঃপতন হবে পঙ্গ পালের কারনে। উবলা'র অধঃপতন ঘটবে অবরোধের মাধ্যমে। পারস্যের(ইরানের) অধঃপতন হবে রিক্তহস্ত ও চোরডাকাতের মাধ্যমে। তুর্কিদের(তুরস্কের) অধঃপতন হবে দায়লামীর(কুর্দি) পক্ষ থেকে। দায়লামী(কুর্দি) অধঃপতন হবে আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে। আর্মেনিয়ার অধঃপতন হবে "খাযার"(রাশিয়া) পক্ষ থেকে।" খাযার"(রাশিয়া) এর অধঃপতন হবে তুর্কি(তুরস্ক) পক্ষ থেকে। আর তুর্কি(তুরস্ক) অধঃপতন হবে বজ্রাঘাতের(পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ) এর মাধ্যমে। সিন্ধ(পাকিস্তান) এর অধঃপতন হবে হিন্দুস্তান(ভারত) পক্ষ থেকে। হিন্দুস্তানের (ভারত) অধঃপতন হবে তিব্বতের (চীন) পক্ষ থেকে। তিব্বতের(চীন) অধঃপতন হবে "রমূল"(প্রাচীন রোমানদের একটি গোত্র বা, আমরিকা) পক্ষ থেকে। হাবসার (ইথিওপিয়া) অধঃপতন হবে ভূমিকম্পের মাধ্যমে। "জাওরা" (বাগদাদ) এর অধঃপতন হবে সুফিয়ানীর তান্ডবের কারনে। "রাওহা"(বাগদাদ শহরের ছোট এলাকা) এর অধঃপতন হবে ভূমিধ্বসের মাধ্যমে। আর সম্পূর্ণ কুফা(ইরাক) এর অধঃপতন হবে হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে।
( গ্রন্থঃ তাজকিরাহ, লেখকঃ ইমাম কুরতুবী, আন নিহায়া ফিল ফিতান, লেখকঃ ইবনে কাসীর, আস সুনানু ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান)
** হযরত ওহাব বিন মুনাব্বাহ (রাঃ) বলেন, আরব উপদ্বীপ(সৌদি আরব, কাতার, আরব আমিরাত, বাহরাইন, ওমান) ততক্ষন পর্যন্ত ধ্বংস হবে না, যতক্ষণ না মিশর ধ্বংস হয়। বিশ্বযুদ্ধ (আমাক প্রান্তের মহাযুদ্ধ) ততক্ষন পর্যন্ত শুরু হবে না, যতক্ষণ না কুফা(ইরাকের একটি শহর) ধ্বংস না হয়। বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে বনু হাশেমের এক ব্যক্তির হাতে কুস্তুন্তুনিয়া(ইস্তাম্বুল) বিজয় হবে। আন্দালুস(স্পেন) ও আরব উপদ্বীপ(সৌদি আরব, কাতার, আরব আমিরাত, বাহরাইন ওমান) এর অধঃপতন ঘটবে ঘোড়ার পা ও সেনাবাহিনীর পারস্পরিক মতানৈক্যের কারনে। ইরাকের অধঃপতন হবে ক্ষুধা ও তরবারি (অস্ত্র) কারণে। আরমেনিয়ার অধঃপতন ঘটবে ভূমিকম্প ও বজ্রাঘাতের(সম্ভবত পারমাণবিক বোমা বা, মিসাইল নিক্ষেপের) কারনে। কুফা(ইরাকের একটি শহর) ধ্বংস হবে শত্রুদের পক্ষ থেকে। বসরা(ইরাক) ধ্বংস হবে ডুবে যাওয়া/নিমজ্জিত হওয়ার কারণে। "উবলা"র অধঃপতন হবে শত্রুদের পক্ষ থেকে। "রাই"(ইরানের একটি শহর) এর অধঃপতন হবে দাইলামের(তুরস্ক ও ইরানের উত্তর এলাকার একটি তুর্কি গোত্র বা, কুর্দি জাতি) এর পক্ষ থেকে। খোরাসানের(আফগানিস্তান ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা) অধঃপতন ঘটবে তিব্বত(চীন) এর পক্ষ থেকে। তিব্বত(চীন) এর অধঃপতন ঘটবে সিন্ধ(পাকিস্তান ও কাশ্মীর) এর পক্ষ থেকে। সিন্ধ (পাকিস্তান) এর অধঃপতন ঘটবে হিন্দুস্তান(ভারত) এর পক্ষ থেকে। ইয়েমেনের অধঃপতন ঘটবে টিড্ডি (পঙ্গপাল) ও বাদশাহীর কারনে। মক্কার অধঃপতন ঘটবে হাবশা(ইথিওপিয়া) এর পক্ষ থেকে। আর মদিনার অধঃপতন ঘটবে ক্ষুধার কারনে।
(আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান, খণ্ড - ৪, পৃষ্ঠা - ৮৮৫)
** হযরত জাফর সাদিক (রহঃ) বলেছেন, "পৃথিবীর দুই তৃতীয়াংশ মানুষ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত এ ঘটনা (ইমাম মাহদীর আবির্ভাব) ঘটবে না। তখন আমি (আবু বসির) জিজ্ঞেস করলাম, যখন পৃথিবীর দুই তৃতীয়াংশ মানুষ ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন কোন ব্যাক্তি অক্ষত থাকবে? উত্তরে, হযরত জাফর সাদিক (রহঃ) বলেছেন, তোমরা(মুসলমানেরা) কি অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশের মধ্যে থাকতে চাও না?"
(বিহারুল আনোয়ার, খন্ড ৫২,পৃষ্ঠা ১১৩, আসরে জুহুরী, পৃষ্ঠা নং - ১৯০)
** হযরত ছাওবান (রাঃ)থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "আমার উম্মতের দুটি দল, আল্লাহ্ তা‘আলা তাদেরকে জাহান্নাম হতে পরিত্রাণ দান করবেন। একদল যারা হিন্দুস্থানের জিহাদ করবে, আর একদল যারা ঈসা ইব্ন মারিয়াম (আঃ)-এর সঙ্গে থাকবে"।
(হাদিসের মান: সহিহ, সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৩১৭৫)
হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ)- বলেছেন,শেষ জামানায় "ইমাম মাহমুদ" ও তার বন্ধু "সাহেবে কিরান বারাহর" প্রকাশ ঘটবে। আর তাদের মাধ্যমে মুসলমানদের বড় বিজয় আসবে। আর তা যেন মাহদীর আগমনের সময়।
(কিতাবুল ফিরদাউস, ৮৭২)
বুরায়দা (রাঃ) হতে বর্ণিত
তিনি বলেন,আমি রছুল ছঃ কে বলতে শুনেছি,
খুব শিগ্রহই মুশরিকরা তাদের বন্ধু অঞ্চলের মুসলমানদের উপর অত্যাচার বৃদ্ধি করে দেবে, আর নির্বিচারে হত্যা করবে। তখন সেখানকার দূর্গম নামক অঞ্চল তথা "বালাদি লিল উছরো"
থেকে একজন দুর্বল বালক তাদের মুকাবিলা করবে। আর তার নেতৃত্বেই মুমিনদের বিজয় আসবে। (গাজওয়াতুল হিন্দ বিজয়)
রাবি. বলেন, তিনি আরো বলেছেন, তার একজন বন্ধু থাকবে যার উপাধী হবে 'সৌভাগ্যবান'।
(আস সুনানু ওয়ারিদাতুল ফিতান, ১৭৯১, আসারুস সুনান, ৮০৩)
** হযরত আবু বাছির (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু আব্দুল্লাহ আস সাদিক (হযরত জাফর সাদিক রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম? কখন আল কায়েম (ইমাম মাহদী) আবির্ভাব হবে? তিনি বললেন আহলে বাইতের (রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বংশধর) জন্য কোন নির্দিষ্ট সময় (উল্লেখ) নেই। তবে ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে ৫টি বিষয় ঘটবে। যেমনঃ ১,আকাশ থেকে আহ্বান। ২, সুফিয়ানীর উত্থান। ৩, খোরাসানের বাহিনীর আত্নপ্রকাশ। ৪, নিরপরাধ মানুষকে ব্যাপক হারে হত্যা করা। ৫, (বাইদার প্রান্তে) মরুভূমিতে একটি বিশাল বাহিনী ধ্বংসে যাবে।
ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে দুই ধরনের মৃত্যু দেখা যাবে। ১, শ্বেত মৃত্যু। ২,লাল মৃত্যু। শ্বেত মৃত্যু (দুর্ভিক্ষের কারনে মৃত্যু) হল মহান মৃত্যু। আর লাল মৃত্যু হল তরবারি (যুদ্ধের) কারনে মৃত্যু। আর আকাশ থেকে তিনি (হযরত জিব্রাইল (আঃ) তার (ইমাম মাহদীর) নাম ধরে আহ্বান করবে ২৩ ই রমজান শুক্রবার রাতে। (হাদিস বড় হওয়ায় সম্পূর্ণ হাদিস উল্লেখ করা হয়নি)
(বিহারুল আনোয়ার, খন্ড - ৫২, পৃষ্ঠা - ১১৯, বিশারাতুল ইসলাম, পৃষ্ঠা - ১৫০, মুন্তাখাবুল আসার, পৃষ্ঠা - ৪২৫, মুজ'আম আল হাদিস আল ইমাম আল মাহদী, খন্ড - ৩, পৃষ্ঠা - ৪৭২)
___________________________________________
(সূরা নং+আয়াত) ১৪+৪৮=১৪৪৮ হিজরি (২০২৬ সাল) এর ব্যাখ্যাঃ
সূরা ইব্রাহীম এর ৪৮ নং আয়াতে বলা আছে-
অনুবাদঃ
যেদিন এ পৃথিবী বদলে গিয়ে অন্য এক পৃথিবীতে রূপান্তরিত হবে আর আসমানসমূহও (বদলে যাবে), আর মানুষ সমুস্থাপিত হবে এক ও অপ্রতিরোধ্য আল্লাহর সম্মুখে।
তাফসীরঃ
[১] ইমাম শওকানী বলেন, আয়াতে দুটো সম্ভাবনাই রয়েছে যে, এই পরিবর্তন গুণগত দিক থেকেও হতে পারে এবং পদার্থগত দিক থেকেও হতে পারে। অর্থাৎ এই আকাশ ও পৃথিবী নিজ নিজ গুণগত দিক দিয়ে পরিবর্তিত হবে অথবা অনুরূপ পদার্থগত দিক থেকে তার পরিবর্তন আসবে, না এই পৃথিবী থাকবে আর না এ আকাশ। পৃথিবীও অন্য হবে এবং আকাশও অন্য। রসূল (সাঃ) বলেছেন, "কিয়ামতের দিন মানুষ সাদা ও লালচে সাদা রঙের ভূমিতে একত্রিত হবে, যা ময়দার রুটির মত হবে, তাতে কারো কোন (মালিকানার) চিহ্ন থাকবে না। (মুসলিম, সিফাতুল কিয়ামাহ) একদা আয়েশা (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, যখন এই আকাশ ও পৃথিবী পরিবর্তন হবে, তখন সেই দিন লোকেরা কোথায় অবস্থান করবে? উত্তরে নবী (সাঃ) বললেন, পুল সিরাতের উপর। (সাবেক উদ্ধৃতি) এক ইহুদীর প্রশ্নের উত্তরে নবী (সাঃ) বলেছিলেন, "সেই দিন লোকেরা পুলের নিকট অন্ধকারে অবস্থান করবে। (মুসলিম, কিতাবুল হায়য) (Ahsanul Bayan)
তাফসীরঃ (ফাতহুল মাজিদ)
কিয়ামতের দিন জমিন পরিবর্তন হয়ে অন্য জমিন হয়ে যাবে, এ আকাশ থাকবে না, পরিবর্তন হয়ে যাবে।
ইমাম শাওক্বানী (রহঃ) বলেন: পরিবর্তন দু’ভাবে হতে পারে (১) গুণগত দিক দিয়ে, (২) পদার্থগত দিক দিয়ে।
উক্ত আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি হাদীসে বলেন: “কিয়ামতের দিন মানুষ সাদা ও লালচে রঙের ভূমিতে একত্রিত হবে, যা ময়দার রুটির মত হবে, তাতে কারো কোন চিহ্ন থাকবেনা। (সহীহ মুসলিম হা: ২৭৯০)
আয়িশাহ হতে বর্ণিত তিনিই সর্বপ্রথম এ আয়াত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বলেন: যেদিন আকাশ-জমিন পরিবর্তন হয়ে যাবে সেদিন মানুষ কোথায় থাকবে? তিনি বললেন: পুলসিরাতের ওপর। (সহীহ মুসলিম হা: ২৭৯০)
এ সম্পর্কে আরো কয়েকটি হাদীস ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) তাঁর তাফসীরে নিয়ে এসেছেন।
৪৭- ৪৮ আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ওয়াদা বাস্তবায়ন করবেনই, তা ভঙ্গ করবেন না।
২. কিয়ামতের দিন আকাশ ও পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে যাবে।
৩. সেদিন আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত কারো কোন মালিকানা থাকবে না।
ইমাম শাওক্বানী (রহঃ) বলেন: পরিবর্তন দু’ভাবে হতে পারে (১) গুণগত দিক দিয়ে, (২) পদার্থগত দিক দিয়ে।
উক্ত আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি হাদীসে বলেন: “কিয়ামতের দিন মানুষ সাদা ও লালচে রঙের ভূমিতে একত্রিত হবে, যা ময়দার রুটির মত হবে, তাতে কারো কোন চিহ্ন থাকবেনা। (সহীহ মুসলিম হা: ২৭৯০)
আয়িশাহ হতে বর্ণিত তিনিই সর্বপ্রথম এ আয়াত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি বলেন: যেদিন আকাশ-জমিন পরিবর্তন হয়ে যাবে সেদিন মানুষ কোথায় থাকবে? তিনি বললেন: পুলসিরাতের ওপর। (সহীহ মুসলিম হা: ২৭৯০)
এ সম্পর্কে আরো কয়েকটি হাদীস ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) তাঁর তাফসীরে নিয়ে এসেছেন।
৪৭- ৪৮ আয়াত হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর ওয়াদা বাস্তবায়ন করবেনই, তা ভঙ্গ করবেন না।
২. কিয়ামতের দিন আকাশ ও পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে যাবে।
৩. সেদিন আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত কারো কোন মালিকানা থাকবে না।
ব্যাখ্যাঃ
আয়াতটি কিয়ামতের দিনের কথা বলেছেন। সেটাও বাস্তব। তবে আমি একটু গল্প বলি।
২০২৫ সালে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ হলো। পারমাণবিক অস্রের কারণে পৃথিবী প্রায় ধ্বংস হয়ে গেলো। এরপর কি হবে? ২০২৬ সাল আসবে তারপর।
৩ ভাগের ১ ভাগ তো যুদ্ধ বিগ্রহে মারা গেলো। আরেক ভাগ মারা যাবে শ্বেত মৃত্যুতে। মানে অনাহারে।
ফসল ফলাদি হবে না এরপর(যুদ্ধের পর)। কারণ? কারণ বেশির ভাগই ধ্বংস হবে। আর কি হবে যে আজাব দেখতে পারবে?
কেয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে ধুয়া। সে সময় সূরা দুখানে ১০ নং আয়াত এর বাস্তবায়ন হবে। বলা আছে-
আল্লাহ বলেন,"অতএব আপনি সেই দিনের অপেক্ষা করুন, যখন আকাশ ধোয়ায় ছেয়ে যাবে। যা মানুষকে ঘিরে ফেলবে। এটা যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের উপর থেকে শাস্তি প্রত্যাহার করুন, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। তারা কি করে বুঝবে, অথচ তাদের কাছে এসেছিলেন স্পষ্ট বর্ণনাকারী রাসুল"। সুরা দোখান-১০-১৩।
মাছরূক বলেন, আমরা আব্দুল্লাহ বিন মাসউদের কাছে বসা ছিলাম। এক লোক এসে বলতে লাগল, হে আবু আব্দুর রহমান! এক লোক বলে বেড়াচ্ছে যে, অচিরেই ধোয়ায় নিদর্শনটি আবর্তিত হবে। যন্ত্রনায় কাফেরদের দম বন্ধ হয়ে যাবে, মুমিনদের সর্দি জাতীয় অনুভব হবে। সহীহ ইবনে হিব্বান-৪৭৬৪।
আর আয়াতে আর বলেছে যে আকাশ পরিবর্তন হয়ে যাবে। সেটাও হবে কিভাবে? সেটাই এই যুদ্ধের পর জমা ধোয়ায় হবে। সূর্য দেখা যাবে না, পৃথিবী অন্ধকার হয়ে থাকবে। এর ফলে কোন ফসল ফলাদি হবে না। আর অনাহারে মানুষ আবারো মারা যাবে।
এই ১০ নং আয়াতের তাফসীর দিলে আর হাদিস দিতে হবে না।
তাফসিরঃ (সূরা দুখানের ১০ নং আয়াত এর-
আহসানুল বায়ান
অতএব তুমি অপেক্ষা কর সে দিনের, যেদিন আকাশ স্পষ্ট ধূমাচ্ছন্ন হবে। [১]
[১] এতে কাফেরদেরকে ধমক দিয়ে বলা হচ্ছে যে, ঠিক আছে (হে নবী) তুমি ঐ দিনের অপেক্ষা কর, যখন আকাশে ধোঁয়ার আবির্ভাব ঘটবে। এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলা হয় যে, মক্কাবাসীদের বিদ্বেষমূলক আচরণে বিরক্ত হয়ে নবী করীম (সাঃ) তাদের উপর অনাবৃষ্টির বদ্দুআ করলেন। যার ফলে তাদের উপর অনাবৃষ্টির শাস্তি নেমে এল। এমন কি খাদ্যাভাবে তারা হাড়, চামড়া এবং মৃত ইত্যাদি খেতে বাধ্য হয়ে পড়ল। আকাশের দিকে তাকালে কঠিন ক্ষুধা ও দুর্বলতার কারণে তারা কেবল ধোঁয়া দেখত। পরিশেষে অতিষ্ঠ হয়ে তারা নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে আযাব দূরীভূত হলে ঈমান আনার অঙ্গীকার করে। কিন্তু এই অবস্থা দূর হয়ে গেলে তারা পুনরায় কুফরী ও অবাধ্যতায় ফিরে আসে। তাই তো বদর যুদ্ধে তাদেরকে আবার কঠোরভাবে পাকড়াও করা হয়। (বুখারীঃ তাফসীর অধ্যায়) কেউ কেউ বলেন, কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার দশটি বড় বড় নিদর্শনাবলীর একটি নিদর্শন ধোঁয়াও। চল্লিশ দিন যাবৎ এ ধোঁয়া বিদ্যমান থেকে কাফেরদের শ্বাসরোধ করবে। আর মু'মিনদের অবস্থা সর্দি লাগার মত হবে। আয়াতে এই ধোঁয়ার কথাই বলা হয়েছে। এই ব্যাখ্যার ভিত্তিতে এই নিদর্শন কিয়ামতের নিকটতম পূর্ব সময়ে প্রকাশ হবে। আর প্রথম ব্যাখার ভিত্তিতে এটা প্রকাশ হয়ে গেছে। ইমাম শাওকানী বলেন, উভয় ব্যাখ্যাই স্ব-স্ব স্থানে সঠিক। আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হিসাবে এ ঘটনা ঘটে গেছে, যা সঠিক সূত্রে প্রমাণিত। এ দিকে কিয়ামতের নিদর্শনসমূহের যে তালিকা বহু সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, তাতেও এই ধোঁয়ার কথা উল্লেখ আছে। কাজেই ওটাও এর পরিপন্থী নয়, বরং তখনও তার আবির্ভাব ঘটবে।
[১] এতে কাফেরদেরকে ধমক দিয়ে বলা হচ্ছে যে, ঠিক আছে (হে নবী) তুমি ঐ দিনের অপেক্ষা কর, যখন আকাশে ধোঁয়ার আবির্ভাব ঘটবে। এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলা হয় যে, মক্কাবাসীদের বিদ্বেষমূলক আচরণে বিরক্ত হয়ে নবী করীম (সাঃ) তাদের উপর অনাবৃষ্টির বদ্দুআ করলেন। যার ফলে তাদের উপর অনাবৃষ্টির শাস্তি নেমে এল। এমন কি খাদ্যাভাবে তারা হাড়, চামড়া এবং মৃত ইত্যাদি খেতে বাধ্য হয়ে পড়ল। আকাশের দিকে তাকালে কঠিন ক্ষুধা ও দুর্বলতার কারণে তারা কেবল ধোঁয়া দেখত। পরিশেষে অতিষ্ঠ হয়ে তারা নবী করীম (সাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে আযাব দূরীভূত হলে ঈমান আনার অঙ্গীকার করে। কিন্তু এই অবস্থা দূর হয়ে গেলে তারা পুনরায় কুফরী ও অবাধ্যতায় ফিরে আসে। তাই তো বদর যুদ্ধে তাদেরকে আবার কঠোরভাবে পাকড়াও করা হয়। (বুখারীঃ তাফসীর অধ্যায়) কেউ কেউ বলেন, কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার দশটি বড় বড় নিদর্শনাবলীর একটি নিদর্শন ধোঁয়াও। চল্লিশ দিন যাবৎ এ ধোঁয়া বিদ্যমান থেকে কাফেরদের শ্বাসরোধ করবে। আর মু'মিনদের অবস্থা সর্দি লাগার মত হবে। আয়াতে এই ধোঁয়ার কথাই বলা হয়েছে। এই ব্যাখ্যার ভিত্তিতে এই নিদর্শন কিয়ামতের নিকটতম পূর্ব সময়ে প্রকাশ হবে। আর প্রথম ব্যাখার ভিত্তিতে এটা প্রকাশ হয়ে গেছে। ইমাম শাওকানী বলেন, উভয় ব্যাখ্যাই স্ব-স্ব স্থানে সঠিক। আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হিসাবে এ ঘটনা ঘটে গেছে, যা সঠিক সূত্রে প্রমাণিত। এ দিকে কিয়ামতের নিদর্শনসমূহের যে তালিকা বহু সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, তাতেও এই ধোঁয়ার কথা উল্লেখ আছে। কাজেই ওটাও এর পরিপন্থী নয়, বরং তখনও তার আবির্ভাব ঘটবে।
আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
অতএব আপনি অপেক্ষা করুন সে দিনের যেদিন স্পষ্ট ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হবে আকাশ [১],
[১] আলোচ্য আয়াতসমূহে উল্লেখিত ধোঁয়া সম্পর্কে সাহাবী ও তাবেয়ীগণের তিন প্রকার উক্তি বর্ণিত আছে। প্রথম উক্তি এই যে, এটা কেয়ামতের অন্যতম আলামত বা কেয়ামতের সন্নিকটবতী সময়ে সংঘটিত হবে। এই উক্তি আলী, ইবন আব্বাস, ইবন ওমর, আবু হুরায়রা, রাদিয়াল্লাহু আনহুম ও হাসান বসরী রাহেমাহুল্লাহ প্রমুখ থেকে বর্ণিত আছে। দ্বিতীয় উক্তি এই যে, এ ভবিষ্যদ্বানী অতীতে পূর্ণ হয়ে গেছে এবং এতে মক্কার সে দুর্ভিক্ষ বোঝানো হয়েছে, যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দো'আর ফলে মক্কাবাসীদের উপর অর্পিত হয়েছিল। তারা ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিল এবং মৃত জন্তু পর্যন্ত খেতে বাধ্য হয়েছিল। আকাশে বৃষ্টি ও মেঘের পরিবর্তে ধুম্র দৃষ্টিগোচর হত। এ উক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রমুখের। তৃতীয় উক্তি এই যে, এখানে মক্কা বিজয়ের দিন মক্কার আকাশে উত্থিত ধূলিকণাকে ধুম্র বলা হয়েছে। এ উক্তি আবদুর রহমান আ'রাজ প্রমুখের। প্রথমোক্ত উক্তিদ্বয়ই সমধিক প্রসিদ্ধ। তৃতীয় উক্তি ইবনে-কাসীরের মতে অগ্রাহ্য। সহীহ হাদীসসমূহে দ্বিতীয় উক্তিই অবলম্বিত হয়েছ। প্রথমোক্ত উক্তিদ্বয়ের বর্ণনাসমূহ নিম্নরূপঃ
হুযায়ফা ইবনে আসীদ বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করলেন। আমারা তখন পরস্পর কেয়ামতের সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেন, যত দিন তোমারা তোমরা দশটি আলামত না দেখ, ততদিন কেয়ামত হবে না [১] পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়, [২] দোখান তথা ধুম্র, [৩] দাব্বা (বা বিচিত্র ধরণের প্রাণী), [৪] ইয়াজুজ-মাজুজের আবির্ভাব, [৫] ঈসা আলাইহিস্সালাম-এর অবতরণ, [৬] দাজ্জালের আবির্ভাব, (৭) পূর্বে ভূমিধাস(৮) পশ্চিমে ভূমিধস, (৯) আরব উপদ্বীপে ভূমিধস, (১০) আদন থেকে এক অগ্নি বের হবে এবং মানুষকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাবে। মানুষ যেখানে রাত্রিযাপন করতে আসবে, অগ্নিও থেমে যাবে, যেখানে দুপুরে বিশ্রামের জন্যে আসবে, সেখানে অগ্নিও থেমে যাবে। [মুসলিম; ২৯০১] এছাড়া কিছু সহীহ ও হাসান হাদীসও একথা প্রমাণ করে যে, ‘দোখান’ ধুম্র কেয়ামতের ভবিষ্যৎ আলামতসমূহের অন্যতম। কুরআনের বাহ্যিক ভাষাও এর সাক্ষ্য দেয়।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, কাফেররা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দাওয়াত কবুল করতে অস্বীকার করল এবং কুফৱীকেই আঁকড়ে রইল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের উপর দো’আ করলেন যে, হে আল্লাহ এদের উপর ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর আমলের দুর্ভিক্ষের ন্যায় দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিন। ফলে কাফেররা ভয়ংকর দুর্ভিক্ষে পতিত হল। এমনকি, তারা অস্থি এবং মৃত জন্তুও ভক্ষণ করতে লাগল। তারা আকাশের দিকে তাকালে ধুম্র ব্যতীত কিছুই দৃষ্টিগোচর হত না। এক বর্ণনায় আছে, তাদের কেউ আকাশের দিকে তাকালে ক্ষুধার তীব্রতায় সে কেবল ধুম্রের মত দেখত। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ তার বক্তব্যের প্রমাণ স্বরূপ এ আয়াতখানি তেলাওয়াত করলেন। দুর্ভিক্ষ প্রপীড়িত জনগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে আবেদন করল, আপনি আপনার মুদার গোত্রের জন্য আল্লাহর কাছে বৃষ্টির দো'আ করুন। নতুবা আমরা সবাই ধ্বংস হয়ে যাব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম দো'আ করলে, বৃষ্টি হল। তখন
اِنَّاكَاشِفُواالُعَذَابِ قَلِيْلًا
আয়াত নাযিল হল। অর্থাৎ, আমরা কিছু দিনের জন্যে তোমাদের থেকে আযাব প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। কিন্তু তোমরা বিপদমুক্ত হয়ে গেলে আবার কুফরের দিকে ফিরে যাবে। বাস্তবে তাই হল, তারা তাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে গেল। তখন আল্লাহ তা'আলা
يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرٰى اِنَّامُنْتَقِمُونَ
আয়াত নাযিল করলেন। অর্থাৎ যেদিন আমরা প্রবলভাবে পাকড়াও করব, সেদিনের ভয় কর। অতঃপর ইবনে-মাসউদ বললেন, এই প্রবল পাকড়াও বদর যুদ্ধে হয়ে গেছে। এই ঘটনা বর্ণনা করার পর তিনি আরও বললেন, পাঁচটি বিষয় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। অর্থাৎ, দোখান তথা ধুম্র, রোম (এর পারসিকদের উপর জয়লাভ), চাঁদ (দ্বিখণ্ডিত হওয়া), পাকড়াও (যা বদরের প্রান্তরে সংঘটিত হয়েছিল) ও লেযাম (বা স্থায়ী আযাব)। [বুখারী; ৪৮০৯, মুসলিম; ২৭৯৮]
[১] আলোচ্য আয়াতসমূহে উল্লেখিত ধোঁয়া সম্পর্কে সাহাবী ও তাবেয়ীগণের তিন প্রকার উক্তি বর্ণিত আছে। প্রথম উক্তি এই যে, এটা কেয়ামতের অন্যতম আলামত বা কেয়ামতের সন্নিকটবতী সময়ে সংঘটিত হবে। এই উক্তি আলী, ইবন আব্বাস, ইবন ওমর, আবু হুরায়রা, রাদিয়াল্লাহু আনহুম ও হাসান বসরী রাহেমাহুল্লাহ প্রমুখ থেকে বর্ণিত আছে। দ্বিতীয় উক্তি এই যে, এ ভবিষ্যদ্বানী অতীতে পূর্ণ হয়ে গেছে এবং এতে মক্কার সে দুর্ভিক্ষ বোঝানো হয়েছে, যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দো'আর ফলে মক্কাবাসীদের উপর অর্পিত হয়েছিল। তারা ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিল এবং মৃত জন্তু পর্যন্ত খেতে বাধ্য হয়েছিল। আকাশে বৃষ্টি ও মেঘের পরিবর্তে ধুম্র দৃষ্টিগোচর হত। এ উক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রমুখের। তৃতীয় উক্তি এই যে, এখানে মক্কা বিজয়ের দিন মক্কার আকাশে উত্থিত ধূলিকণাকে ধুম্র বলা হয়েছে। এ উক্তি আবদুর রহমান আ'রাজ প্রমুখের। প্রথমোক্ত উক্তিদ্বয়ই সমধিক প্রসিদ্ধ। তৃতীয় উক্তি ইবনে-কাসীরের মতে অগ্রাহ্য। সহীহ হাদীসসমূহে দ্বিতীয় উক্তিই অবলম্বিত হয়েছ। প্রথমোক্ত উক্তিদ্বয়ের বর্ণনাসমূহ নিম্নরূপঃ
হুযায়ফা ইবনে আসীদ বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করলেন। আমারা তখন পরস্পর কেয়ামতের সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেন, যত দিন তোমারা তোমরা দশটি আলামত না দেখ, ততদিন কেয়ামত হবে না [১] পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়, [২] দোখান তথা ধুম্র, [৩] দাব্বা (বা বিচিত্র ধরণের প্রাণী), [৪] ইয়াজুজ-মাজুজের আবির্ভাব, [৫] ঈসা আলাইহিস্সালাম-এর অবতরণ, [৬] দাজ্জালের আবির্ভাব, (৭) পূর্বে ভূমিধাস(৮) পশ্চিমে ভূমিধস, (৯) আরব উপদ্বীপে ভূমিধস, (১০) আদন থেকে এক অগ্নি বের হবে এবং মানুষকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাবে। মানুষ যেখানে রাত্রিযাপন করতে আসবে, অগ্নিও থেমে যাবে, যেখানে দুপুরে বিশ্রামের জন্যে আসবে, সেখানে অগ্নিও থেমে যাবে। [মুসলিম; ২৯০১] এছাড়া কিছু সহীহ ও হাসান হাদীসও একথা প্রমাণ করে যে, ‘দোখান’ ধুম্র কেয়ামতের ভবিষ্যৎ আলামতসমূহের অন্যতম। কুরআনের বাহ্যিক ভাষাও এর সাক্ষ্য দেয়।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, কাফেররা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দাওয়াত কবুল করতে অস্বীকার করল এবং কুফৱীকেই আঁকড়ে রইল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের উপর দো’আ করলেন যে, হে আল্লাহ এদের উপর ইউসুফ আলাইহিস সালাম-এর আমলের দুর্ভিক্ষের ন্যায় দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দিন। ফলে কাফেররা ভয়ংকর দুর্ভিক্ষে পতিত হল। এমনকি, তারা অস্থি এবং মৃত জন্তুও ভক্ষণ করতে লাগল। তারা আকাশের দিকে তাকালে ধুম্র ব্যতীত কিছুই দৃষ্টিগোচর হত না। এক বর্ণনায় আছে, তাদের কেউ আকাশের দিকে তাকালে ক্ষুধার তীব্রতায় সে কেবল ধুম্রের মত দেখত। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ তার বক্তব্যের প্রমাণ স্বরূপ এ আয়াতখানি তেলাওয়াত করলেন। দুর্ভিক্ষ প্রপীড়িত জনগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে আবেদন করল, আপনি আপনার মুদার গোত্রের জন্য আল্লাহর কাছে বৃষ্টির দো'আ করুন। নতুবা আমরা সবাই ধ্বংস হয়ে যাব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম দো'আ করলে, বৃষ্টি হল। তখন
اِنَّاكَاشِفُواالُعَذَابِ قَلِيْلًا
আয়াত নাযিল হল। অর্থাৎ, আমরা কিছু দিনের জন্যে তোমাদের থেকে আযাব প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। কিন্তু তোমরা বিপদমুক্ত হয়ে গেলে আবার কুফরের দিকে ফিরে যাবে। বাস্তবে তাই হল, তারা তাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে গেল। তখন আল্লাহ তা'আলা
يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرٰى اِنَّامُنْتَقِمُونَ
আয়াত নাযিল করলেন। অর্থাৎ যেদিন আমরা প্রবলভাবে পাকড়াও করব, সেদিনের ভয় কর। অতঃপর ইবনে-মাসউদ বললেন, এই প্রবল পাকড়াও বদর যুদ্ধে হয়ে গেছে। এই ঘটনা বর্ণনা করার পর তিনি আরও বললেন, পাঁচটি বিষয় অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। অর্থাৎ, দোখান তথা ধুম্র, রোম (এর পারসিকদের উপর জয়লাভ), চাঁদ (দ্বিখণ্ডিত হওয়া), পাকড়াও (যা বদরের প্রান্তরে সংঘটিত হয়েছিল) ও লেযাম (বা স্থায়ী আযাব)। [বুখারী; ৪৮০৯, মুসলিম; ২৭৯৮]
আয়াত টা আবার একটু দেখি। "যেদিন এ পৃথিবী বদলে গিয়ে অন্য এক পৃথিবীতে রূপান্তরিত হবে আর আসমানসমূহও (বদলে যাবে), আর মানুষ সমুস্থাপিত হবে এক ও অপ্রতিরোধ্য আল্লাহর সম্মুখে।"
বলেছে, "এ পৃথিবী বদলে গিয়ে অন্য এক পৃথিবীতে রূপান্তরিত হবে আর আসমানসমূহও (বদলে যাবে)"
কিয়ামতের দিন তো তা হবেই। কিন্তু আমি এবার গল্প বলি। হাদিস দিয়ে মিলিয়ে।
হাদিসে বলা আছে যে, শেষ জামানায় বজ্রাঘাতে পৃথিবীতে ধ্বংস ছড়িয়ে পরবে আর আধুনিকতার ধ্বংস হবে, আর যুগ এই যুগে ফিরে আসবে।
মানে এই ৩য় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীতে আর কোন আধুনিকতা থাকবে না। সব ধ্বংস হয়ে যাবে হাদিসের মতে। আর পৃথিবী তখন ঘোড়া তরবারির যুগে পরিণত হবে। এর ব্যাখ্যা দেখতে এই পোস্টটি দেখুন- https://www.facebook.com/2482791198661432/posts/2533564050250813/
তো এইগুলো হবে ১৪৪৮ হিজরিতে(২০২৬ সাল) এইগুলি হবে, তাফসীর থেকে ইঙ্গিত পাবেন আরো। আমার গল্প অনেকে সত্য মনে করবে। কিন্তু তা যে আসলেই সত্যই হবে।
___________________________________________
(সূরা নং+আয়াত) ১৪+৪৯=১৪৪৯ হিজরি (২০২৭ সাল) এর ব্যাখ্যাঃ
সূরা ইব্রাহীম এর ৪৯ নং আয়াতে বলা আছে-
অনুবাদঃ
সেদিন তুমি অপরাধীদেরকে দেখবে শৃঙ্খলে তাদের হাত পা শক্ত করে বাঁধা।(Kaseer)
সেদিন তুমি অপরাধীদেরকে (হাত পা) দেখবে শৃঙ্খলিত অবস্থায়। (Fathul Majid)
তাফসিরঃ
[১] অর্থাৎ যেদিন সমস্ত মানুষ মহান বিচারপতি আল্লাহর সামনে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হবে। তখন যদি আপনি অপরাধীদের দিকে দেখতেন যারা কুফরি ও ফাসাদ সৃষ্টি করে অপরাধ করে বেড়িয়েছে, তারা সেদিন শৃঙ্খলিত অবস্থায় থাকবে। [ইবন কাসীর] এখানে কয়েকটি অর্থ হতে পারে, একঃ কাফেরগণকে তাদের সমমনা সাথীদের সাথে একসাথে শৃংখলিত অবস্থায় রাখা হবে। [ইবন কাসীর] যেমন অন্য আয়াতে এসেছে, “(ফেরেশতাদেরকে বলা হবে,) ‘একত্র কর যালিম ও তাদের সহচরদেরকে এবং তাদেরকে যাদের ইবাদাত করত তারা---" [সূরা আস-সাফফাত: ২২]
আরও এসেছে, “আর যখন দেহে আত্মাসমূহ সংযোজিত হবে” [সূরা আত-তাকওয়ীর: ৭]
যাতে করে শাস্তি বেশী ভোগ করতে পারে। কেউ কারো থেকে পৃথক হবে না। পরস্পরকে কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। দুইঃ তারা নিজেদের হাত ও পা শৃংখলিত অবস্থায় জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। [কুরতুবী] তিন, কাফের ও তাদের সাথে যে শয়তানগুলো আছে সেগুলোকে একসাথে শৃংখলিত করে রাখা হবে। [বাগভী; কুরতুবী] এমনও হতে পারে যে, সব কয়টি অর্থই এখানে উদ্দেশ্য।
আরও এসেছে, “আর যখন দেহে আত্মাসমূহ সংযোজিত হবে” [সূরা আত-তাকওয়ীর: ৭]
যাতে করে শাস্তি বেশী ভোগ করতে পারে। কেউ কারো থেকে পৃথক হবে না। পরস্পরকে কঠোর শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। দুইঃ তারা নিজেদের হাত ও পা শৃংখলিত অবস্থায় জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। [কুরতুবী] তিন, কাফের ও তাদের সাথে যে শয়তানগুলো আছে সেগুলোকে একসাথে শৃংখলিত করে রাখা হবে। [বাগভী; কুরতুবী] এমনও হতে পারে যে, সব কয়টি অর্থই এখানে উদ্দেশ্য।
ব্যাখ্যাঃ
এর পরই সব কাফিররা আর ফাসাদ সৃষ্টি করতে পারবে না। এই আজাব দিয়েই তাদের এক শাস্তি দিয়েছে। ২০২৭ সাল, যা হবে কাফিরদের পরাজয়ের শেষ সময়। এই সময়ও ঘোড়া তলোয়ারের মাধ্যমে যুদ্ধ চলবেই। কাফিরদের ধরে হত্যা করা হবে ও বন্দী করা হবে। এই কালো পতাকা ধারীরা এমন ভাবে যুদ্ধ করবে যে তাদের সামনে পাহাড় থাকলে তাও টলে যাবে। তারা তারপর মক্কার দিকে রওনা দিবে। আর রাস্তায় যুদ্ধ চালিয়েই যাবে। (সুনানে ইবনে মাজা; খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৬৭; মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫১০)
এরাই সেই পূর্ব দিকের (খোরাসানের) সৈনিক যারা সেই ১৪৪১ সালেই প্রস্তুতি নিয়েছিল। আর এরাই সেই দল যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করেছে। সুফিয়ানির সাথে যুদ্ধ করছে। খারেজী গোষ্ঠীর সাথে যুদ্ধ করছে।আর এই বিজয়ী দলে আছেন আল্লাহর মনোনীত দুই ইমাম, একজন মাহমুদ ও আরেকজন মনসুর! আর থাকবেন তাদের দুইজন সহচর শামীম বারাহ ও শুয়াইব ইবনে সালেহ! দুই মীম ও দুই শীন! (তারিখুল বাগদাদ, ১২২৯)
আর এরাই সেই দল যার শেষ অংশ টুকু বাকি থাকবেই, যারা বায়াত নিবে ইমাম মাহদির হাতে!
হাদিসঃ
** হযরত ছওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের ধনভাণ্ডারের (ফোরাত নদীর স্বর্ণের পাহাড়ের) নিকট তিনজন বাদশাহের সন্তান যুদ্ধ করতে থাকবে। কিন্তু ধনভাণ্ডার (স্বর্নের পাহাড়) তাদের একজনেরও হস্তগত হবে না। তারপর পূর্ব দিক (খোরাসান) থেকে কতগুলো কালো পতাকাবাকী দল আত্মপ্রকাশ করবে। তারা তোমাদের সাথে এমন ঘোরতর লড়াই লড়বে, যেমনটি কোন সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে লড়েনি”। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর নবীজি (সাঃ) আরও একটি বিষয় উল্লেখ করে বললেন, “তারপর আল্লাহর খলীফা মাহদির আবির্ভাব ঘটবে। তোমরা যখনই তাঁকে দেখবে, তাঁর হাতে বাইয়াত নেবে। যদি এজন্য তোমাদেরকে বরফের উপর দিয়ে হামাগুড়ি খেয়ে যেতে হয়, তবুও যাবে। সে হবে আল্লাহর খলীফা মাহদি”।
(সুনানে ইবনে মাজাহ; খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৬৭; মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫১০)
** হযরত হাসান (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আর্যদের পিতল বর্নের চাঁর ব্যাক্তি বনি তামিম গোত্রের অভিমুখে বের হবেন। তাদের মধ্যে একজন হবেন হাঙর মাছের মত, যার নাম হবে শুয়াইব ইবনে সালেহ। তার সাথে ৪০০০ সৈন্য থাকবে। তাদের পোশাক হবে সাদা, আর তাদের পতাকা হবে কালো। তারা ইমাম মাহদীর অগ্রগামী অনুগত সৈন্য হবে এমনকি তারা তাদের শত্রুদের পরাজিত না করে মাহদীর সাথে সাথে সাক্ষাৎ করবে না।
(আল ফিতানঃ নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৯৭)
হযরত আনাস (রা.) বলেন, একদা রাসূল (সাঃ) এর এক মজলিসে আমি আর বিলাল (রা.) বসা ছিলাম। সে সময়ে আল্লাহর রাসূল (সা.) বিলাল (রা.) এর কাধে তার ডান হাত রেখে বললেন, "হে বিলাল! তুমি কী জানো? তোমার বংশে আল্লাহ এক উজ্জল তারকার জন্ম দিবেন, যে হবে সে সময়ের সবচেয়ে সভাগ্যবান ব্যাক্তি। অবশ্যেই সে একজন ইমামের সহচর হবে।"
রাবি বলেন, সম্ভবত রাসূল (সাঃ) বলেছেন, সেই ইমামের আগমন ইমাম মাহদীর পূর্বেই ঘটবে।
(আসারুস সুনান, ৩২৪৮)
সাহল ইবনু সা'দ (রাঃ) হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, অচিরেই পূর্ব দিকে এক ফিৎনার সৃষ্টি হবে।(দ্বিতীয় কারবালা) আর তা হবে মুশরিকদের দ্বারা। (মালাউন বাহিনি+মুনাফিক বাহিনি) তখন মুমিনদের একটি দল তাদের বিরুদ্বে যুদ্ধ করে বিজয় আনবে। আর তাদের সেনাপতি হবে ঐ সময়ের সবচেয়ে সৌভাগ্যবান ব্যক্তি "সাহেবে কিরান"! আর তাদের পরিচালনা করবে একজন ইমাম। যার নাম হবে "মাহমুদ"। অবশ্যেই তারা মাহদীর আগমন বার্তা নিয়ে আসবে।
(তারিখুল বাগদাদ, ১২২৯)
হযরত আমর ইবনে শু’আইব এর দাদা বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
“জুলকা’দা মাসে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে দ্বন্দ ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ঘটনা ঘটবে। ফলে হজ্জ পালনকারীরা লুণ্ঠিত হবে এবং মিনায় যুদ্ধ সংগঠিত হবে। সেখানে ব্যাপক প্রানহানির ঘটনা ঘটবে এবং রক্তের স্রোত বয়ে যাবে। অবশেষে তাদের নেতা (হযরত মাহদি) পালিয়ে রোকন ও মাকামে ইব্রাহিমের মধ্যখানে চলে আসবে। তাঁর অনীহা সত্ত্বেও মানুষ তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবে। তাঁকে বলা হবে, আপনি যদি আমাদের থেকে বাইয়াত নিতে অস্বীকার করেন, তাহলে আমরা আপনার ঘাড় উড়িয়ে দিব। বদর যুদ্ধের সংখ্যার সমসংখ্যক মানুষ তাঁর হাতে বায়’আত গ্রহণ করবে। সেদিন যারা তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবে, আকাশ ও পৃথিবীর অধিবাসীরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবে”। (মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৪৯)
“জুলকা’দা মাসে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে দ্বন্দ ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ঘটনা ঘটবে। ফলে হজ্জ পালনকারীরা লুণ্ঠিত হবে এবং মিনায় যুদ্ধ সংগঠিত হবে। সেখানে ব্যাপক প্রানহানির ঘটনা ঘটবে এবং রক্তের স্রোত বয়ে যাবে। অবশেষে তাদের নেতা (হযরত মাহদি) পালিয়ে রোকন ও মাকামে ইব্রাহিমের মধ্যখানে চলে আসবে। তাঁর অনীহা সত্ত্বেও মানুষ তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবে। তাঁকে বলা হবে, আপনি যদি আমাদের থেকে বাইয়াত নিতে অস্বীকার করেন, তাহলে আমরা আপনার ঘাড় উড়িয়ে দিব। বদর যুদ্ধের সংখ্যার সমসংখ্যক মানুষ তাঁর হাতে বায়’আত গ্রহণ করবে। সেদিন যারা তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করবে, আকাশ ও পৃথিবীর অধিবাসীরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবে”। (মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫৪৯)
তাবরানির অপর এক বর্ণনায় আছে,
“বাইয়াত গ্রহণকারী মুসলমানের সংখ্যা হবে বদরী মুজাহিদগণের সংখ্যার সমান। অর্থাৎ তিনশ তের জন”। (আল মু’জামুল আসওসাত, খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ১৭৬)
(আর হয়তো আমি, আপনি বা আমার আপনার কোনো প্রিয়জন সেদিন বেঁচে নাও থাকতে পারি :'( হয়তো জামাত বদ্ধ না হতে পারলে ধ্বংস হবো, জামাত বদ্ধ হতে পারলে শহীদ হবো! আর নাহয় ইমাম মাহ্দী পর্যন্ত যেতে পারবো তো! )
আর তারাই ২০২৮ সালেই ইমাম মাহদীকে মক্কায় পাবে আর বায়াত নিবে! ১৪৫০ হিজরী থেকে পরে গুলো সামনের পোস্টে ব্যাখ্যায় আসছে।
আমার গল্পটি বুঝতে পারবে এক এক জন এক এক রকমভাবে। যার জ্ঞান যতটুকু।
আর সব আয়াত, তাফসীর নিয়েছি এখান থেকে- www.quranmazid.com/view/sura/14
আমাদের ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/mahmudgazwatulhind/
(সামনের পোস্টে আসছে আর আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা!)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন